সায়েম হত্যা: ইউপি চেয়ারম্যানের ফাঁসির দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ

নিজস্ব প্রতিবেদক
শফিউল আলম রাজীব, উপজেলা প্রতিনিধি - দেবীদ্বার, কুমিল্লা
প্রকাশিত: শনিবার ২০শে এপ্রিল ২০২৪ ০৯:২৪ অপরাহ্ন
সায়েম হত্যা: ইউপি চেয়ারম্যানের ফাঁসির দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ

দেবীদ্বারে ব্যবসায়ি সায়েম হত্যাসহ একাধিক হত্যা-ধর্ষণ-জবরদখল মামলায় অভিযুক্ত আসামি আলোচিত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলমের ফাঁসি এবং হত্যাকান্ডে অভিযুক্ত চেয়ারম্যনের পুত্র আব্দুল্লাহ আল-মামুনসহ তার দুই সহযোগী মো. মোস্তফা ও মিন্টু মিয়াসহ অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের দাবীতে কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ- মানববন্ধন- প্রতিবাদ সভা করেছে কয়েকশত এলাকাবাসী। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক।


শনিবার (২০এপ্রিল) সকাল ১১টা থেকে অবরোধ-মানববন্ধন ও বিক্ষোভ চলাকালে দির্ঘ যানজটের কবলে প্রায় ঘন্টাব্যপী প্রচন্ড তাবদাহে ভোগান্তিতে পড়তে হয় পরিবহন যাত্রীদের। এসময় প্রায় কয়েকশত নারী- পুরুষ ব্যানার ফ্যাষ্টুন, প্লেকার্ড হাতে নিয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল সহকারে কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক হয়ে থানা গেইট এবং পরে নিউমার্কেট মুক্তিযোদ্ধা চত্তরে এসে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে ইউপি চেয়ারম্যানের ফাঁসির দাবি করে।


বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ৯নং গুনাইঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ মুকবল হোসেন মুকুল, ইউনিয়ন আওয়ামীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল হাসান রাসেল, যুব ইউনিয়ন কুমিল্লা জেলার সাবেক সভাপতি একেএম মিজানুর রহমান কাউছার, নাজিম উদ্দিন মাষ্টার, ইউনুছ সরকার, সায়েম হত্যা মামলার বাদী ও তার ছোট ভাই মো. আবু কাউছার সরকার, এমরান, কাজী আল আমিন প্রমূখ।


বক্তারা বলেন, গত ঈদের ছুটিতে দেবীদ্বারে সায়েম হত্যাসহ ৫ দিনে ৪ খুণের একটিরও রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। এসব হত্যান্ডের সাথে জড়িতদের মধ্যে সায়েম হত্যা মামলার আসামী খোরশেদ আলমকে আওয়ামীলীগ নেতা ছিদ্দিকুর রহমান ধরে পুলিশে সোপার্দ করে, তাছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে আর কোন আসামীকে এখনো গ্রেফতার না করায় বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে অপরাধীদের আইনের আওতায় না আনলে উপজেলাব্যাপী বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দেন।


বক্তারা আরো বলেন, হত্যা, ধর্ষণ, জবরদখল, হিন্দুদের উচ্ছেদ করে জমি দখল, নিজ অফিসে টর্চার সেল তৈরী করে মতের বিরোধ এবং অর্থ উপার্জনসহ নানা ঘটনায় সমালোচিত আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. খোরশেদ আলম ২০০০ সালে গুনাইঘর গ্রামের বাংলাদেশ বেতার শিল্পী কালিপদ হত্যা মামলা, সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারের মা ও কিশোরী কণ্যাকে ধর্ষণ মামলাসহ বিভিন্ন মামলায় রাজনৈতিক প্রভাবে ছাড়া পেয়ে তার অপকর্ম অব্যাহত রাখে। সর্বশেষ গত ৮ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকা থেকে পাওনা টাকা আদায়ের লক্ষ্যে একদল সন্ত্রাসী দিয়ে আবু সায়েম সরকার (৩৯) নামের এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে দেবীদ্বার উপজেলার গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম ও তার ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুন। অপহরনের পর রাত পৌনে ২টায় দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মিলে আবু সায়েমের লাশ। এ ঘটনায় সাবেক চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম রাতেই গ্রেফতার হন।


নিহত সায়েম উপজেলার গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের চাষারপাড় গ্রামের আবদুর রহিম সরকারের ছেলে এবং দেবীদ্বার উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিদ্দিকুর রহমান ভূইয়ার মেয়ের জামাতা। 


ওই ঘটনায় নিহতের ভাই মো. আবু কাউছার বাদী হয়ে এজহার নামীয় ৪জন ও অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনকে আসামী করে দেবীদ্বার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।