ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচার মধ্যে চরআইচা কো-ইড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘর ভাঙচুর এবং উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে।
গত রোববার (২৭ আগস্ট) রাতে উপজেলার উত্তর মাদ্রাজ গ্রামের এন এম আলমগির বাদী হয়ে পাঁচজনের নামসহ অজ্ঞাত ২-৩ জনকে অভিযুক্ত করে দক্ষিণ আইচা থানায় মামলা করা হয়।
এর আগে, গত শুক্রবার (২৫ আগস্ট) ভোরে ওই স্কুল ঘরটি ভাঙচুর করে নিয়ে যাওয়া হয়। এর দুইদিন পর ২৭ আগস্ট (রোববার) সকালে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সেখানে উপস্থিত হয়ে স্কুলটি ফিরে পেতে মানববন্ধন করেন। পরে ওইদিন রাতেই দক্ষিণ আইচা থানায় মামলা করা হয়।
মামলার অভিযুক্তরা হলেন- চরমানিকা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড চরআইচা গ্রামের মৃত আলহাজ মৌলভি সৈয়দ আহাম্মেদের ছেলে কো-ইড স্কুলের সভাপতি মো. বশির উল্লাহ মিয়া ও তার ছেলে এমনানুল হক বাকের, হাজারীগঞ্জ ইউনিয়ন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আবুল হোসেন মুন্সির ছেলে মাহাবুব (৪০), রসুলপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মো. রুহুল আমিন ছেলের মো. সোহাগ (৩২), চরআইচা ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত বাদত হাওলাদার ছেলের নসু হাওলাদার (৫৫)। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ আগস্ট ভোরে চরআইচা কো-ইড স্কুলটি ভাঙচুর করে অফিসকক্ষে থাকা আলমিরাসহ কাগজপত্র ও সব আসবাবপত্র নিয়ে যান। এসব জিনিসের মূল্য আনুমানিক ৪ লাখ টাকা। স্কুলটি কেন ভাঙচুর করা হয়েছে জানতে চাইলে অভিযুক্তরা গালমন্দ করতে থাকেন। পরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে রোববার রাতে মামলা করা হয়।
এ বিষয়ে দক্ষিণ আইচা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ পুরো ঘটনার তদন্ত করছে। খুব দ্রুতই দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে।
উল্লেখ্য, চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানার চরমানিকা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য আইচা গ্রামে ১৯৯২ সালে ওই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক কো-অপারেশন ইন ডেভেলপমেন্টের (কো-ইড) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক প্রেইড হাইড। উপজেলার যে-সব দুর্গম এলাকায় কোনো স্কুল ছিল না সেখানে তিনি ৫৭টি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। যার সবকটিই চলমান আছে। শুধু মধ্য আইচার স্কুলটি নিয়ে সমস্যা হচ্ছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে মধ্য চর আইচা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি মো. বশির উল্লাহ মিয়া জানান, কে বা কারা স্কুলঘর ভেঙে তুলে নিয়ে গেছে তা নিয়ে তিনি কিছু জানেন না। মামলা যাদের নামে হয়েছে তারা আদালতে গিয়ে জামিন চাইবেন। এমন মামলা হয়ই বলে ফোন কেটে দেন তিনি।
মধ্য চর আইচার বাসিন্দা ও শিক্ষক মো. সামসুদ্দিন খোকন বলেন, যখন এ এলাকায় কোনো স্কুল ছিল না, রাস্তাঘাট ছিল না, তখন কো-ইড বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে শিক্ষার মান খুবই ভালো। প্রতিবছর সমাপনী পরীক্ষায় ৯০-১০০ শতাংশ নম্বর পেয়ে সবাই পাস করে।
এ ব্যাপারে চরফ্যাশন উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা আল নোমান বলেন, আমি চরফ্যাশনে থাকাকালীন সময়ে স্কুলটির জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ ছিল। তখন বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা করেছি।
চরফ্যাশন উপজেলার বর্তমান নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নওরীন হক বলেন, তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।