প্রকাশ: ৩ ডিসেম্বর ২০২১, ০:১১
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্সে পড়েন আবুল রাজু । করোনার কারণে বাড়িতেই কাটিয়েছেন দীর্ঘ সময়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখা প্রায় শেষ দিকে। এখন নিচ্ছেন চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি। তবে দীর্ঘদিন পর হলে ফিরে পড়ার পরিবেশ না পেয়ে প্রতিদিন ভোরে উঠে লাইব্রেরিতে যান। লাইব্রেরির গেটের সামনে ব্যাগের সারিতে নিজের ব্যাগটি রাখতে হয় কাইয়্যুমকে। ভেতরে বসার জন্য পছন্দমতো একটি সিট পেতে অপেক্ষা করেন গেটের সামনে।
শুধু কাইয়্যুম নন, এমন অনেককেই দেখা যায় লাইব্রেরিতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সিট সংকটের কারণে এ চিত্র নিত্যদিনের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বর্তমানে ১৮টি হলে সব মিলিয়ে ১৭ হাজার ৬০ জনের আবাসন সুবিধা রয়েছে। এটি মোট শিক্ষার্থীর ৪৬ শতাংশ। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আরেক তথ্য অনুযায়ী, মোট শিক্ষার্থীর ৬০ ভাগই আবাসিক হলে থাকেন। ফলে হলে পড়ার জন্য পর্যাপ্ত রিডিং রুম বা থাকার পরিবেশ কোনোটাই থাকে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগে ভর্তি হয়েছেন রাব্বি হাসান। ২৫ জনের রুমে কোনোমতে মাথাটা গুঁজে থাকেন। যে স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন তা হলে ওঠার শুরুর দিনই যেন এক প্রলয়ঙ্করি ঝড়ে ধ্বংস হয়েছে। গণরুমের নতুন তত্ত্বই যেন বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তার প্রথম পাঠ।
‘স্বপ্নে’র বিশ্ববিদ্যালয় কেমন ছিল জানতে চাইতেই রাব্বি হাসান বলেন, ভেবেছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক কিছু জানবো, শিখবো। পড়ালেখার চমৎকার একটা পরিবেশ থাকবে। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষার সুন্দর একটি পরিবেশ থেকে জ্ঞান অর্জন করবো। অথচ বাস্তবতা পুরোপুরি বিপরীত।
আবাসন, গ্রন্থাগারে সিট, শ্রেণিকক্ষ, বিশ্বমানের গবেষণাগার সংকটসহ নানা সমস্যা নিয়ে শতবর্ষে দাঁড়িয়ে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।