মহামারী করোনার কারণে দীর্ঘ দেড় বছর পর বহুল প্রত্যাশিত দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলতে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের বেশীর ভাগ প্রতিষ্ঠান শ্রেণি পাঠদানের প্রায় সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে। এর ব্যতিক্রম দেখা গেছে গোয়ালন্দ শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত গোয়ালন্দ শহীদ স্মৃৃতি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়টির নির্মাণাধীন ৬ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন, পুরণো দ্বিতল প্রশাসনিক ভবনকে ৩য় তলায় উন্নতকরণ এবং টয়লেট কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য বিদ্যালয়ের মাঠটি ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে করে এতোদিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় কোনরূপ সমস্যা না হলেও বিদ্যালয় খোলার পর প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কার্যক্রম নানাভাবে ব্যাহত হওয়ার কথা বলছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি স্কুলটিতে শিক্ষক-কর্মচারী সংকটও রয়েছে প্রকট আকারে।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে সরেজমিন স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, নির্মাণ কাজের জন্য মাঠ জুড়ে চারদিক রড, সিমেন্ট, বালু, পাথর, বাঁশ-কাঠ প্রভৃতি ফেলে রাখা হয়েছে। এর মধ্যেই নীচু মাঠের মাঝখানে জমে রয়েছে বৃষ্টির পানি। বিদ্যালয়ের চারদিক ময়লা- আবর্জনায় ভরপুর। শ্রেণি কক্ষের টয়লেটগুলো ব্যবহার অনুপযোগী। একজন মাত্র মহিলা ৩লা বিশিষ্ট শ্রেণি কক্ষগুলো পরিচ্ছন্ন করার কাজ করছেন।
এ সকল বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আশুতোষ সরকার জানান, অন্যান্য বিদ্যালয়ের মতো আমরাও ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শ্রেণি পাঠদানের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে লোকবল কম থাকায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। বিদ্যালয়ের ১২জন শিক্ষকের জায়গায় রয়েছেন মাত্র ৬ জন। এর মধ্যে আবার একজন শিক্ষক সাময়িক বহিস্কার হয়েছেন। বিদ্যালয় খুললেও তিনি পাঠদানে যুক্ত হতে পারবেন না। প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকসহ ৬ শিক্ষকের পদ শূণ্য রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। চতুর্থ শ্রেণির ৫জন কর্মচারীর মধ্যে ৪টি পদই শূণ্য। একজন আয়া থাকলেও তিনি অসুস্থ্য হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তৃতীয় শ্রেণির ২টি পদের মধ্যে ২টিই শূণ্য।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আরো জানান, বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজের জন্য মাঠ জুড়ে নির্মাণ সামগ্রী ছড়িয়ে থাকায় প্রত্যাহিক সমাবেশ করা সম্ভব হবে না। এছাড়া শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক চলাফেরা করাও ব্যাহত হবে। সেইসাথে খানিকটা ঝুঁকিও রয়েছে। এ অবস্থায় আমরা দুই ঠিকাদারকে অনুরোধ জানিয়েছি অবশিষ্ট কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য।
দ্বিতল ভবন সম্প্রসারণ ও টয়লেট কমপ্লেক্স নির্মান কাজের সাব-ঠিকাদার কবির হোসেন জানান, তিনি রাজবাড়ীর ঠিকাদার টিটু কাজীর কাছ থেকে নিয়ে ৮২ লক্ষ টাকার কাজটি সাব-কন্ট্রাক্ট নিয়ে বাস্তবায়ন করছেন। আগামী ২/৩ মাসের মধ্যে তারা অবশিষ্ট কাজ শেষ করতে পারবেন বলে এ প্রতিনিধিকে জানান।
ছয় তলা বিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মান কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মিলন এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি খলিলুর রহমান খলিল জানান, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্বাবধানে তারা ৫ কোটি ৭৮ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকার এ কাজটি বাস্তবায়ন করছেন। ২০১৯ সালের ২২ অক্টোবর ওয়ার্ক অর্ডার পাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই তারা কাজ শুরু করেন। ২ বছর মেয়াদী প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হতে চললেও করোনা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন কারণে এখনো বেশ কিছু কাজ বাকী আছে। তবে আশা করছি দ্রুত শেষ করতে পারবো। বিদ্যালয় খুলে দেয়ার পর যেকোন দুর্ঘটনা এড়াতে তারা সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে কাজ করার চেষ্টা করবেন বলে জানান।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।