বন্ধ ঢাবির হলে থাকছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা, উপাচার্য জানেন না

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২২শে জুন ২০২১ ১০:৪৭ পূর্বাহ্ন
বন্ধ ঢাবির হলে থাকছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা, উপাচার্য জানেন না

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ রোধে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ন্যায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং হলগুলো বন্ধ রয়েছে।


এ কারণে হলে থাকতে পারছেন না সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তবে এ নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল এবং জগন্নাথ হলে থাকছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। লকডাউনের প্রায় পুরোটা সময় তারা হলে অবস্থান করেছেন বলে জানা গেছে।



জানা গেছে, করোনার এই বন্ধে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক এসএম রিয়াদ হাসান এবং হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমির হামজাসহ প্রায় ২০ জন কর্মী শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ২২১, ২২২, ৩১৩ ও ৩১৫, ৩২২ নম্বরসহ আশপাশের কয়েকটি কক্ষে অবস্থান করছেন।


এছাড়া ৩০২, ৩০৭, ৩০৯, ৩১৩, ৩১৫, ৩১৭ ও ৩১৯ নম্বরসহ বেশ কয়েকটি রুমে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আড্ডা দিতেও দেখা যায়। প্রাধ্যক্ষ হল ত্যাগের নির্দেশ দিলেও তারা হল ছেড়ে যাননি।


এসএম রিয়াদ হাসান হলে থাকার বিষয়টি স্বীকার করলেও আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এছাড়াও সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) ও জগন্নাথ হলেও ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা অবস্থান করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।


শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রভোস্ট (প্রাধ্যক্ষ) অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা থাকছে আমি জেনেছি, তাদের হল ত্যাগের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেউ কেউ অমান্য করছেন। দু-একদিনের মধ্যে আমরা একটি চূড়ান্ত অভিযান চালাব। আশা করি, তারা আর অবস্থান করতে পারবেন না।


নাম প্রকাশ না করার শর্তে জহুরুল হক হলের হলের এক কর্মচারী বলেন, বিভিন্ন সময় রাতের বেলা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও হলের শিক্ষার্থী যারা এখন কেন্দ্রীয় নেতা, তারাও হলে আসেন। কিন্তু তারা কিছুক্ষণ অবস্থান করে চলে যান।


সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ছাত্রলীগের বিভিন্ন বর্ষের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী ও হলের পদপ্রত্যাশীরা বিভিন্ন কক্ষে অবস্থান করছিলেন। রাতের বেলায় হলের বিভিন্ন কক্ষে লাইট, ফ্যান জ্বলছে।



সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি সঠিক নয়। আমি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হলে থাকতে দেখিনি। হাউজ টিউটিররাও দেখভাল করেন। তারা রিপোর্টও জমা দিয়েছেন। দু-একজনকে রাতে পাওয়া গিয়েছিল। তাদের বের করে দেওয়া হয়েছে।


জগন্নাথ হলে দেখা গেছে, হলের গেটে তালাবদ্ধ। গেটের সামনের লাইট বন্ধ। কিন্তু কয়েকজন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে ভিতরে প্রবেশ করেছেন।বিভিন্ন কক্ষে লাইট, ফ্যান চালু করে তারা আড্ডা দিচ্ছেন।


বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বন্ধের সময় কোনো শিক্ষার্থীর হলে থাকা কোনোভাবেই বৈধ নয়। কোনো হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা থাকছেন বলে আমার জানা নেই। হল প্রভোস্টরাও বিষয়টি আমাকে অবহিত করেননি।


ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হলে থাকার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, এমন কিছু তথ্য আমরা পেয়েছি। হল প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তথ্য যেহেতু পেয়েছি, কাজ করা হচ্ছে।


#ইনিউজ৭১/এনএইচএস/২০২১