প্রতি বছরই ঈদুল ফিতর সামনে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ে। এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। চলতি (মার্চ) মাসের ১৯ দিনে প্রবাসীরা বাংলাদেশে পাঠিয়েছেন ২২৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসেবে) এই পরিমাণ টাকা প্রায় ২৭ হাজার ৪৭৪ কোটি টাকার সমান। এ সময়কাল অনুযায়ী, প্রতিদিন গড়ে ১২ কোটি ডলার বা এক হাজার ৪৬৪ কোটি টাকার রেমিট্যান্স এসেছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে মার্চে প্রবাসী আয়ে নতুন রেকর্ড তৈরি হতে পারে, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্রে জানা গেছে।
গত বছর আগস্টে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ধারাবাহিকভাবে প্রবাসী আয়ের গতি বাড়তে থাকে। চলতি অর্থবছরের ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৬৪ কোটি ডলার রেমিট্যান্স দেশে আসে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে ফেব্রুয়ারিতে, যা ছিল ২৫৩ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) প্রথম আট মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে এক হাজার ৮৪৯ কোটি ডলার, যা গত বছরের প্রথম আট মাসের তুলনায় ৩৫৫ কোটি ডলার বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৪৯৪ কোটি ডলার।
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট ও মহামারী পরিস্থিতি সত্ত্বেও ২০২০ সালের জুলাইয়ে রেকর্ড ২ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স বাংলাদেশে এসেছিল। তবে গত ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স প্রবাহ সেই রেকর্ড ভেঙে ফেলে, যা আগের বছরের ডিসেম্বরে আসা ১৯৯ কোটি ১০ লাখ ডলারের তুলনায় ৬৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার বেশি।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার। আগস্টে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ ডলার, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার, নভেম্বরে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার, এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স প্রেরণ করা হয়েছে।
এই ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত রেমিট্যান্সের ওপর দেশটির অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অনেকটাই নির্ভরশীল। আগামী মাসগুলোতে এই প্রবাহ অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তা একটি বড় ভূমিকা রাখতে পারে, বিশেষ করে বিদেশে কাজ করা বাংলাদেশিদের জন্য উন্নত সুযোগ-সুবিধার দিকে একটি নতুন দ্বার খুলে দিতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।