প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, সৌদি আরব ও তেল রপ্তানিকারক দেশগুলো তেলের দাম কমিয়ে দিলেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সঙ্গে সঙ্গেই বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, এতদিনেও কেন এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ট্রাম্প মনে করেন, পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংস্থা ওপেকের সদস্য দেশগুলো অনেকাংশে চলমান যুদ্ধের জন্য দায়ী।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সভায় ভার্চুয়াল বক্তৃতায় ট্রাম্প বলেন, তেলের উচ্চমূল্যের কারণেই রাশিয়া ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। তেলের দাম কমানোর মাধ্যমে যুদ্ধের অর্থনৈতিক উৎস বন্ধ করা সম্ভব। সৌদি আরবের মতো দেশের এই পদক্ষেপ দ্রুত যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারবে।
ট্রাম্প বলেন, রাশিয়ার অর্থনীতি তেলের ওপর নির্ভরশীল। খনিজ তেলের দাম অনেক বেশি হওয়ায় রাশিয়া যুদ্ধ চালানোর আর্থিক সামর্থ্য অর্জন করছে। যদি তেলের দাম কমানো হয়, তাহলে রাশিয়ার যুদ্ধ চালানো অসম্ভব হয়ে পড়বে। সৌদি আরবসহ তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর প্রতি তিনি এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতায় থাকলে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত তিনি ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সমাধান করতেন। বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের বিলম্ব নিয়ে ট্রাম্প অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ক্ষমতা গ্রহণের আগে থেকেই তিনি এই যুদ্ধ বন্ধের উপায় নিয়ে কথা বলে আসছেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি, যখন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযানের নির্দেশ দেন। প্রায় তিন বছর ধরে চলমান এই যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি এবং লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার জন্য পুতিনের সঙ্গে তার বৈঠক আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি দাবি করেন, তার এই উদ্যোগ যুদ্ধের অবসানে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধ বন্ধ না হলে রাশিয়া আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে।
বিশ্বব্যাপী চলমান সংঘাত ও মানবিক বিপর্যয় নিয়ে ট্রাম্পের এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, তেলের দাম কমানো যুদ্ধ থামানোর উপায় হতে পারে, তবে এটি বাস্তবায়নে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জটিলতা রয়েছে।
যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি যেমন সমর্থন পেয়েছে, তেমনি সমালোচনার মুখেও পড়েছে। অনেকেই মনে করেন, তেলের দাম কমানো কেবল একটি সাময়িক সমাধান হতে পারে, কিন্তু সংঘাতের দীর্ঘমেয়াদি সমাধান এতে সম্ভব নয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই বিষয়ে কার্যকর সমাধান খুঁজছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।