গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মোঃ খাঁন মঙ্গলবার ঝিনাইদহে একটি মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি দাবি করেছেন যে, আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি 'পাপিষ্ট ফ্যাসিস্ট রেজিম' প্রতিষ্ঠা করেছে এবং দুইবার গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে দেশে। তাঁর মতে, আওয়ামী লীগ তৃতীয়বার গণহত্যা ঘটানোর পরিকল্পনা করছে, কিন্তু তারা এবার তা করতে পারবে না। রাশেদ খাঁন আরও বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই গণহত্যা হয়েছে এবং তারা যে কোনোভাবেই এ দেশে নিজেদের রাজনীতি টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করবেন।
তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগের শাসনকাল ১৬ বছরের দীর্ঘ সময়ে দেশের অভ্যন্তরে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে। রাশেদ খাঁন বলেন, "আওয়ামী লীগ যে গণহত্যা চালিয়েছে, তা কখনো মাফ করা যাবে না। এবার আমরা তাদের তৃতীয়বার গণহত্যা করার সুযোগ দেব না।" তিনি আরও বলেন যে, জনগণের জন্য আসন্ন বিপ্লব সফল করতে সব রাজনৈতিক দলকে একযোগে কাজ করতে হবে।
এছাড়া, তিনি বলেন, "যদি ঐক্যবদ্ধভাবে বিপ্লব না করা যায়, তাহলে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় ফিরে আসবে এবং কাউকেই ছাড় দেয় না। তারা সবাইকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেবে।" এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি দেন। তার মতে, জনগণের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে হবে।
মতবিনিময় সভায় রাশেদ খাঁন আরও বলেন, "দেশে এখন তারুণ্যের নেতৃত্ব প্রয়োজন।" তিনি জানান, দেশের জনগণ আর শেখ হাসিনার আমলের রাজনীতি দেখতে চায় না। তাই রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের জন্য নতুন পথ খুঁজে বের করার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, "যারা এখনো শেখ হাসিনার শাসনের সুবিধা নিচ্ছে, তারা কখনোই জনগণের নেতা হতে পারবে না। তাদের পথ ভিন্ন এবং জনগণ তাদের গ্রহণ করবে না।"
এছাড়া, রাশেদ খাঁন জাতীয় সরকার গঠনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে কথা বলেন। তিনি বলেন, বিপ্লবের পর দেশে একমাত্র জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করেই স্থায়ী শান্তি এবং উন্নতি সম্ভব। জাতীয় সরকার গঠন করার জন্য তিনি ৩১ দফার গুরুত্বকেও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, "এটি শুধু বিএনপির নয়, আমাদেরও।" তিনি আরও বলেন, এই দফাগুলো ৪৫টি দলের সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে এবং এই দফাগুলোর মাধ্যমে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।
রাশেদ খাঁন তার বক্তব্যে বিশেষভাবে উল্লেখ করেন ঝিনাইদহের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি। তিনি বলেন, ঝিনাইদহে চাঁদাবাজি, দুর্নীতি এবং দখলদারিত্ব চলছে, যা জনগণের জন্য ক্ষতিকর। তিনি এই ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান এবং জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
মতবিনিময় সভায় অন্যান্য বক্তারা রাশেদ খাঁনের বক্তব্যের সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন এবং আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে তাদের সমালোচনা অব্যাহত রাখেন। বক্তারা বলেন, দেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এক ধরনের পরিবর্তন চাহিদা রয়েছে এবং তারা কোনোভাবেই বর্তমান সরকারের দুর্নীতি এবং দুঃশাসন মেনে নেবে না।
এছাড়া, সভায় উপস্থিত নেতারা জাতীয় সরকারের পক্ষে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেন এবং একত্রিত হয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের জন্য কাজ করার আহ্বান জানান। তাঁরা বিশ্বাস করেন যে, জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়া সম্ভব।
রাশেদ খাঁন শেষে তাঁর বক্তব্যে বলেন, "আওয়ামী লীগ আর দেশের রাজনীতিতে থাকতে পারবে না। তাদের পতন ঘন্টা বেজে গেছে। আমরা জাতীয় সরকার গঠন করে বাংলাদেশকে একটি নতুন দিশায় এগিয়ে নিয়ে যাব।"
এই সভার মাধ্যমে তিনি একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক বার্তা দিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে তার দলের আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতির আহ্বান জানান।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।