আশুলিয়ায় পোশাক শিল্পে ধাক্কা: ৪৫টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নেছার উদ্দিন খান, স্টাফ রিপোর্টার, সাভার:
প্রকাশিত: বুধবার ১১ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০২:৩৭ অপরাহ্ন
আশুলিয়ায় পোশাক শিল্পে ধাক্কা: ৪৫টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ

সাভারের আশুলিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষের জেরে ৪৫টি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। কয়েক দিন ধরে চলা এই অসন্তোষে শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও অবরোধের মুখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া পূরণের জন্য কর্তৃপক্ষ এবং শ্রমিকদের মধ্যে কোনো সমঝোতা না হওয়ায় পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে ওঠে। 


শ্রমিকরা মূলত তাদের বেতন বৃদ্ধি, কর্মপরিবেশের উন্নতি এবং নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তবে কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি না পাওয়ায় শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে কারখানার ভেতরে ও বাইরে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার কারণে কারখানা কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধের ঘোষণা দেয়।


অন্যদিকে, আরও ২৫টি কারখানায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দেওয়ার পরে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এই কারখানাগুলোর শ্রমিকদের মধ্যে এখনও বিক্ষোভের মেজাজ বিরাজ করছে। তারা নিজেদের দাবিতে অনড় থাকায় পরিস্থিতি শান্ত করা যাচ্ছে না। 


বেশ কয়েকটি কারখানার সামনে শ্রমিকরা সড়কে অবরোধ করেন, যার ফলে ওই এলাকাগুলোতে যানজট সৃষ্টি হয়। আশুলিয়ার বিভিন্ন সড়কে চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, সাধারণ মানুষের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ দেখা দেয়। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা তাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্যই এই বিক্ষোভ করছেন এবং যতক্ষণ পর্যন্ত না তাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়, ততক্ষণ তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।


কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শ্রমিকদের দাবির বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে এবং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। তবে শ্রমিকদের বিক্ষোভ এবং অবরোধের কারণে কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় ছিল না। 


পোশাক শিল্প বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি খাত, এবং এই খাতের শ্রমিকদের অসন্তোষের ফলে দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। শ্রমিকদের আন্দোলন ও বিক্ষোভে কতদিন এই পরিস্থিতি স্থায়ী হবে এবং এর সমাধান কীভাবে হবে, তা এখনো অনিশ্চিত। তবে কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের মধ্যে দ্রুত সমঝোতা হওয়া প্রয়োজন, না হলে এই সংকট আরও গভীরতর হতে পারে।


সাধারণ ছুটি ঘোষিত কারখানাগুলোর শ্রমিকরা কবে কাজে ফিরে আসবেন তা এখনো নিশ্চিত নয়। অনির্দিষ্টকালের এই ছুটি শ্রমিকদের জন্য অর্থনৈতিকভাবে চাপের কারণ হতে পারে, এবং এর ফলে ভবিষ্যতে আরও বড় আকারে আন্দোলন গড়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।