বিএসএফের গুলিতে কোচবিহারে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে এর আগে কেন্দ্রকে নিশানা করেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তা নিয়ে ময়দানে নেমেছিল তৃণমূল। ঘেরাও করার চেষ্টা করা হয়েছিল অমিতের ডেপুটি তথা কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের বাড়ি। সেই আবহে এ বার বিএসএফের এক আধিকারিকের বিরুদ্ধে বাহিনীর লেডি কনস্টেবলকে ধর্ষণের অভিযোগ তুললেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। বিষয়টি নিয়ে টুইটও করেছেন তিনি। সুর চড়িয়েছেন বিজেপির বিরুদ্ধেও।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি কোচবিহারের মাথাভাঙার কলেজ ময়দানের সভামঞ্চ থেকে প্রেমকুমার বর্মণ নামে স্থানীয় এক যুবকের কথা তোলেন অভিষেক। তাঁর অভিযোগ, গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর দিনহাটা-১ ব্লকের গীতলদহ এলাকার ভারবাঁধা গ্রামের বাসিন্দা প্রেমকুমারের মৃত্যু হয়েছে বিএসএফের গুলিতে। তাঁর দাবি, ২৩ বছরের ওই যুবক ভিন্ রাজ্যে কাজ করতেন। বাড়ি এসে মাঠে ঘুরতে গিয়ে তিনি বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারান। বিএসএফের বিরুদ্ধে ‘নৃশংসতা’ চালানোর অভিযোগ তুলে অভিষেক দাবি করেন, প্রেমকুমারের শরীর থেকে ১৮০টি বুলেটের টুকরো পাওয়া গিয়েছে। ওই সভামঞ্চ থেকেই অভিষেক হুঁশিয়ারি দেন, তাঁরা এর শেষ দেখে ছাড়বেন। এর পরই গত রবিবার নিশীথের ‘বাড়ি ঘেরাও’ কর্মসূচি পালন করে তৃণমূল।
এই ঘটনাপ্রবাহে মঙ্গলবার নতুন মাত্রা যোগ করেছেন কুণাল। বিএসএফ আধিকারিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মতো অভিযোগ করে টুইট করেছেন তিনি। টুইটারে কুণালের অভিযোগ, ‘‘নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ ক্যাম্পে বিএসএফের এক লেডি কনস্টেবলকে ধর্ষণ করেছেন এক জন বিএসএফ কম্যান্ডার। বিএসএফ নির্যাতিতাকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করেছে। এর পর ভবানীপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। ওই কম্যান্ডারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এখন বিজেপি কী বলবে?’’ কুণালের এই অভিযোগ বিজেপি তথা শাহের বিরুদ্ধে তৃণমূলের আক্রমণের পারদ আরও কয়েক ধাপ চড়িয়ে দেবে বলেই দলের একটি অংশের মত। কারণ, বিএসএফ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনস্থ। যে মন্ত্রকের মাথায় রয়েছেন শাহ।
তবে ধর্ষণের ওই অভিযোগ নিয়ে সরকারি ভাবে কোনও মন্তব্য করেনি বিএসএফ। তবে বিএসএফের একটি সূত্রের দাবি, অভিযুক্ত বিএসএফের কম্যান্ডার নন। তিনি এক জন সাব ইনস্পেক্টর। এক লেডি কনস্টেবলকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। কলকাতা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে এক জন মহিলাকে ভর্তি করানো হয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালে। এই নিয়ে অভিযোগ দায়ের হয়েছে ভবানীপুর থানায়। কিন্তু যে হেতু ঘটনাস্থল নদিয়া, তাই অভিযোগপত্রটি জিরো এফআইআর হিসাবে ওই জেলার পুলিশের কাছে পাঠানো হয়েছে।
তবে কুণালের এই টুইট প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কারও কোনও বিচ্যুতি হয়ে থাকলে, তা সমর্থনযোগ্য নয়। বিচারে দোষী প্রমাণিত হলে শাস্তিও হবে। তবে খুন-ধর্ষণ এ রাজ্যে তো প্রতিদিনের ঘটনা। তবে সব ঘটনায় কি মুখ্যমন্ত্রীর গ্রেফতারি দাবি করা হবে?’’
সূত্র: আনন্দবাজার
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।