পাওনা টাকা আদায় করতে গিয়ে শাহ আলম (৪০) নামে এক থ্রি হুইলার সিএনজি চালককে মারধর করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে আড়তদ্বার ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে।
যদিও পুলিশ বলছে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ও তদন্ত ছাড়া মৃত্যুর কারন নিশ্চিত করে কিছুই বলা সম্ভব না। এদিকে ঘটনার পর থেকে আড়তদ্বারের সন্ধান পায়নি পুলিশ। আর তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাওয়ায় কোন বক্তব্যও নেয়া যায়নি।
মৃত শাহ আলম (৪০)বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার চাউলাকাঠী এলাকার মোসলেম হাওলাদারের ছেলে। তবে কর্মস্থল বরিশালে হওয়ায় সে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বরিশাল নগরের রসুলপুর কলোনীতে বসবাস করতো।
বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল কালাম আজাদ জানান,সোমবার (২৯ আগস্ট) রাত পৌনে ২ টার দিকে মৃত অবস্থায় শাহ আলমকে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তাকে চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করে নিয়মানুযায়ী হাসপাতালের লাশ রাখা কক্ষে প্রেরণ করেন।
তবে স্বজনরা শুরু থেকেই শাহ আলম হাওলাদারকে মারধর করা হয়েছে এমন অভিযোগ তুললে মরদেহের ময়নাতদন্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। সোমবার সকালে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে। পরবর্তীতে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়।
এদিকে মর্গ থেকে জানানো হয়েছে, সঠিক সময়ে কাগজপত্র হাতে না পাওয়ায় সোমবার ময়নাতদন্ত করা সম্ভব হয়নি, তবে আগামীকাল সকালে শাহ আলমের মরেদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হবে।
মৃত শাহ আলমের দুই ছেলে শুভ ও শান্ত জানান,তাদের বাবা বর্তমানে সিএনজি চালালেও, পূর্বে নগরের পোর্টরোডস্থ সুজন বানিজ্য ভান্ডার নামক ফলের আড়তে কাজ করতো। যে আড়তের মালিক নগরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুজন খানের।
তারা বলেন, সুজন খান এক থেকে দেড় হাজার টাকার মতো বাবার কাছে পায় বলে দাবি করে আসছিলো। আর এ টাকার জন্য সুজন খান ও তার লোকজন রোববার দিবাগত রাত ১১ টার দিকে বাড়িতে আসার পথে বাবাকে ধরে নিয়ে যায় আড়তে। তারপর সেখানে বসে বেধরক মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে পাওনা টাকা না দেয়ায় সিএনজিটি রেখে বাবাকে মুমুর্ষ অবস্থায় রিকশায় উঠিয়ে পাঠিয়ে দেয় সুজন ও তার লোকজন।
পথিমধ্যে বাবা অসুস্থ হয়ে পরলে খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার জরুরী বিভাগের চিকিৎসক বাবাকে মৃত ঘোষনা করেন বলে।
যদিও এ বিষয়ে জানতে সুজনের আড়তে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি, সেইসাথে তার ব্যবহৃত মোবাইলফোনে কল দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে মৃত শাহ আলম চালিত সিএনজির সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেছেন তার স্বজনরা।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন বলেণ, আমরা প্রথমে শুনেছিলাম গতরাত ৩টার দিকে রিকশায় করে বাসায় যাওয়ার পথে রসূলপুর ব্রিজে বসে অসুস্থ হয়ে পরে শাহ আলম। এরপর রিকশা চালক তাকে নিয়ে হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। পরবর্তীতে স্বজনদের কাছ থেকে জানতে পারি শাহ আলম নামের ওই ব্যক্তিকে মারধর করা হয়েছে এবং এর ফলেই তার মৃত্যু হয়েছে। এসব বিষয় শুনে আমরা শাহ আলমের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করেছি।
এদিকে ঘটনাস্থলও সোমবার সকালে পরিদর্শন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, স্বজনরা অভিযোগ দিলে সেই অনুযায়ী তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।