নওগাঁয় ভাসমান রেস্তোরা ও ছাগলের খামারে আগুন

নিজস্ব প্রতিবেদক
রিফাত হোসাইন সবুজ, জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ
প্রকাশিত: বুধবার ১৩ই অক্টোবর ২০২১ ০৬:৫৯ অপরাহ্ন
নওগাঁয় ভাসমান রেস্তোরা ও ছাগলের খামারে আগুন

নওগাঁয় ভাসমান রেস্টুরেন্ট আগুনে লেগে সম্পন্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। অগ্নীকান্ডের এ ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সকাল ৭টার দিকে সদর উপজেলার নওগাঁ-দুলবহাটি সড়কের পাশে তালতলির বিলে ভাসমান রেস্টুরেন্ট আগুন লাগে। ক্ষতিগ্রস্থ রেস্টুরেন্ট মালিক জানান, ২৮টি ছাগলসহ সবকিছু পুড়ে তার প্রায় ৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। 


রেস্টুরেন্ট মালিক ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, রেস্টুরেন্টটি লোকালয় থেকে একটু দূরে বিলে হওয়ায় কেউ বুঝতে পারেনি। ধারনা করা হচ্ছে সকাল ৭টার দিকে আগুন লাগে। এর পর বিলের পাশে রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করার সময় স্থানীয়রা রেস্টুরেন্টে আগুন লাগা দেখতে পেয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়। এর পর সকাল ৮টার দিকে ফায়ার সার্ভিস এর একটি দল এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। কিন্তু ততক্ষনে পুরো রেস্টুরেন্ট পুড়ে ছাই হয়ে যায়। রেস্টুরেন্টে মোট তিনটি ঘর ছিল দুটি রেস্টুরেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা হতো এবং পাশেই একটি ঘরে রাতের বেলা ছাগল রাখা হতো। আগুনে ২৮টি ছাগল ও রেস্টুরেন্টের মামলাল পুড়ে গেছে।


স্থানীয় চকপ্রান এলাকার বাসিন্দা টিটু আহম্মেদ আহম্মেদ বলেন, এরশাদের ভাসমান রেস্টুরেন্ট কাঁঠ ,টিন ও বাঁশ দিয়ে তৈরি করা। তালতলি বিলে যারা ঘুরতে আসতো তারা এই ভাসমান রেস্টুরেন্টে বসে সময় কাটাতো। সাধারণত এখানে কোল্ডডিংস, চিপস, কেক এ জাতীয় খাবার রাখা হতো। পাশেই একটি ঘরে সারাদিন ছাগল মাঠে চড়িয়ে রাতের বেলা রাখা হতো। এখন সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেল। আমাদের ধারণা কেউ শক্রতা করে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আগুন লাগার সঠিক কারন বের করা হোক এটাই প্রত্যাশা করছি।


ক্ষতিগ্রস্থ রেস্টুরেন্ট মালিক এরশাদ হোসেন বলেন, আমি ২০১৬সালে রেস্টুরেন্টটি চালু করি। পাশাপাশি থেকে ছাগল লালন-পালন করছি। সারাদিন ছাগলগুলো মাঠে চড়ানোর পর রাতের বেলা আমার ভাসমান রেস্টুরেন্ট এর সাথে লাগানো একটি ঘরে ছাগলগুলো রাখি। আজ সকালে হঠ্যাৎ আমার এক প্রতিবেশি ফোন দেয় যে ভাসমান রেস্টুরেন্টে আগুন লেগেছে। আমি তারাহুড়ো করে গিয়ে দেখি সব কিছু পুড়ে যাচ্ছে। স্থানীয় একজন ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারা এসে জলন্ত আগুন নেভাই। কিন্তু ততক্ষনে আমার ভাসমান রেস্টুরেন্টের সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ২৮টি ছাগল ছিল এবং রেস্টুরেন্টে শুকনো জাতীয় খাবার ও আনুসাঙ্গিক জিনিসপত্র ছিল এতে করে আমার প্রায় ৬লক্ষ টাকার মত ক্ষতি হয়েছে।


তিনি আরো বলেন,  কয়েক মাস থেকে রাতে কেউ থাকে না পাহারার জন্য। তার সুযোগে হয়তো কেউ আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। কিন্তু কে এমনটা করেছে তার সঠিক ধারনা নাই। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।


নওগাঁ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর উপ-পরিচালক এ,কে,এম মুরশেদ (লাকী) বলেন, আমরা সেখানকার স্থানীয় এক ব্যক্তির ফোন পাওয়ার সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে রওনা দেই। ভাসমান রেস্টুরেন্ট পৌছানের পর পুরো রেস্টুরেন্টটি পুড়ে যায়। এর পর আমরা জলন্ত আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। যেহেতু লোকালয় থেকে কিছুটা দূরে যার কারনে আগুন লাগার বিষয়টি স্থানীয়দের জানতে সময় লেগেছে। আমরাও দেরিতে জানতে পেরেছি। ক্ষতিগ্রস্ত ভাসমান রেস্টুরেন্ট মালিক বলছে তার ৬লাগ টাকার মত ক্ষতি হয়েছে। তবে সেখানে রেস্টুরেন্ট এবং ছাগল পালন করা হতো। বেশ কয়েক লাগ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আগুন লাগার কারন ও ক্ষতির পরিমান সঠিক তদন্তের পর জানা যাবে।


এ বিষয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল জানান, ভাসমান রেস্টুরেন্টে আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। রেস্টুরেন্ট মালিক এরশাদের সাথে আমার কথা হয়েছে। সে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে চায়। আমি তাকে বলেছি থানায় এসে যেন অভিযোগ করে। রেস্টুরেন্ট এর পাশাপাশি সেখানে ছাগল পালন করা হতো। ২৮টি ছাগল ছিল। সব ছাগল আগুনে পুড়ে গেছে। বিষয়টি খুবই বেদনাদায়ক। আমরা অবশ্যই গুরত্ব দিয়ে ঘটনাটি তদন্ত করবো।