বরিশালে এমএলএম প্রতারণা, গ্রেফতার ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক
এইচ.এম.এ রাতুল, জেলা প্রতিনিধি, বরিশাল।
প্রকাশিত: বুধবার ৬ই অক্টোবর ২০২১ ০৭:৫৬ অপরাহ্ন
বরিশালে এমএলএম প্রতারণা, গ্রেফতার ৩

বরিশালে ই-কমার্সের নামে মানুষের ৩০ লাখ টাকা প্রতারণা ও আত্মসাতের অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (৪ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে  স্থানীয়দের সহতায় নগরীর পূর্ববিল্ববাড়ী এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করেন এয়ারর্পোট থানা পুলিশ।


গ্রেফতারকৃতরা হল, নগরীর কাউনিয়া এলাকার কাগাশুরা ৩ নং ওয়ার্ডের  মৃত বারেক শেখের মেয়ে মোসাঃ শাহিনুর বেগম, তার স্বামী আমিনুল ইসলাম সুমন মোল্লা ও ছেলে শাহারিয়ার ইসলাম শাকিল।  বুধবার (৬ অক্টোবর) বেলা ১১ টায়  এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উপ-পুলিশ কমিশনার উত্তর মো. জাকির হোসেন মজুমদার এ তথ্য জানান।


উপ-পুলিশ কমিশনার  বলেন, কাউনিয়া থানাধীন কাগাশুরায় বারেক শেখ সুপার মার্কেটে "বন্ধু জন ফার্নিচার মেলা এন্ড ভ্যারাইটিজ স্টোর" নামে একটি দোকান খুলে মোসাঃ শাহিনুর বেগম তার স্বামী আমিনুল ইসলাম সুমন মোল্লা ও তাদের ছেলে শাহারিয়ার ইসলাম শাকিল । গত এক বছর ধরে  ফার্নিচার, গ্রোচারী জিনিস কম মূল্য কিস্তির মাধ্যমে দেয়ার কথা বলে প্রলোভন দেখিয়ে ৫০০ থেকে ১০০০ মানুষের কাছ থেকে সপ্তাহে ২০০ টাকা আবার কারো কাছ থেকে প্রতিদিন ৫০ টাকা নেয়।  তবে টাকা নিয়ে দু একজনকে তারা কিছু পন্য দিয়েছে। পরবর্তিতে পন্য না দেয়া বন্ধ করে দিলে  টাকা ফেরত চায় ভুক্তভোগীরা। তারা মানুষের বিশ্বাস অর্জনের জন্য টাকার রশিদ দিত। কিন্তু তাদের টাকা নেয়ার আইনত কোন ভিত্তি ছিলনা। এ সবই ছিল তাদের কৌশল মাত্র।তারা জালিয়াতি ও প্রতারনার লক্ষ্যে সাধারন মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিল। এভাবে গত ১ বছর তাদের কাছ থেকে পন্য দেয়ার নাম করে ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় তারা ।  


তিনি আরও জানান, এটা হচ্ছে ই কমার্সের মিনি ভার্সন। তারা মানুষকে বলতো কোন জিনিসের সম্পূর্ন মূল্য পরিশোধ করতে না পারলে তাদের কাছ থেকে অল্প করে অর্ধেক মূল্য জমা দিয়ে মালামাল নিতে পারবেন এবং বাকি মূল্য মালামাল নেয়ার পর আবার অল্প অল্প করে কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারবেন। আরো বলে ৫ হাজার টাকা জমা হলে ১ লাখ টাকা লোন নিতে পারবেন। তাদের এসব কথায় বিশ্বাস করে কাশীপুর ইউনিয়নের পূর্ববিল্ববাড়ী গ্রামের বাসিন্দা মো. ইউসুফ হাওলাদারের স্ত্রী লাইলী আক্তার প্রতিদিন ১০ টাকা, ২০ টাকা, ৩০ টাকা করে চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩৫৫০ টাকা জমা দিয়েছেন। এখন তাকে পন্য বা টাকা ফেরত না দেয়ায় তিনি বাদী হয়ে এ তিন জনের নামে একটি প্রতারনা ও আতœসাতের মামলা দায়ের করেন।


এরই প্রেক্ষিতে গত সোমবার (৪ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে  মোসাঃ শাহিনুর বেগম, তার স্বামী আমিনুল ইসলাম সুমন মোল্লা ও তাদের ছেলে শাহারিয়ার ইসলাম শাকিল পূর্ববিল্ববাড়ী হারুনের দোকানের সামনে টাকা উত্তোলন করতে আসলে ভুক্তভোগীরা টাকা চাইলে তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময়  ভুক্তভোগীরা তাদের আটকে রেখে পুলিশের খবর দেন। পওে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ তাদেরকে আটক করে নিয়ে আসে। আটক আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে এ ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এর মধ্য থেকে শাহারিয়ার ইসলাম শাকিলকে সমাজ সেবা অফিসের প্রবেসন অফিসারের জিম্মায় দেয়া হয়েছে। বাকী দুজনকে আদালতের মাধ্যমে করাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। 


সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিন) মো. ফজলুল করিম ফজলু, কাউনিয়া ও এয়ারপোর্ট থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. রবিউল ইসলাম শামীম, এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ কমলেস চন্দ্র হালদার ।