বিয়ের পর থেকেই এএসআই সৌমেন তার স্ত্রী আসমাকে নির্মমভাবে নির্যাতন ও মারধর করতেন। কিছুদিন আগেও খুলনা থেকে কুষ্টিয়া এসে আসমাকে মারধর করে খুলনায় চলে যান।
খুলনা থেকে কুষ্টিয়ায় এসে তিনজনকে হত্যা করেন এএসআই সৌমেন। এ ঘটনায় পুলিশ সৌমেনকে ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি ও ম্যাগাজিনসহ আটক করেছে।
পুলিশ, হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেলা সোয়া ১১টার দিকে শহরের কাস্টমস মোড় এলাকায় প্রকাশ্যে শাকিল, আসমা ও রবিনকে গুলি করেন সৌমেন। এ সময় স্থানীয় জনগণ ও ব্যবসায়ীরা সৌমেনকে আটক করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং অভিযুক্ত সৌমেনকে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক করে।
নিহতরা হলেন সৌমেনের স্ত্রী আসমা (২৫), তাদের ছেলে রবিন (৫) এবং শাকিল (২৮) নামের আরেকজন। তবে শাকিলের সঙ্গে সৌমেনের পরিবারের সদস্যদের সম্পর্ক কী, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
আসমা কুমারখালী উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের নাতুড়িয়া গ্রামের মেজবাহ আলীর মেয়ে। এবং নিহত রবিন আসমার দ্বিতীয় স্বামীর সন্তান। আর নিহত শাকিল বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন সেলস অফিসার পদে (ডিএসও) চাকরি করতেন। জেলার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের শাওতা গ্রামের মেসবাহ আলীর ছেলে তিনি। আসমার বাড়িও একই উপজেলায়।
#ইনিউজ৭১/জিয়া/২০২১
আর সৌমেন খুলনার ফুলতলা থানায় সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হিসেবে কর্মরত আছেন। তার গ্রামের বাড়ি মাগুরা জেলার আড়পাড়ায়।
নিহত আসমার ভাই হাসান আলী গণমাধ্যমকে বলেন, আমার আপু আসমার আগে দুই জায়গায় বিয়ে হয়েছিল। নিহত রবিন তার দ্বিতীয় স্বামীর সন্তান। সৌমেন আমার আপুর তৃতীয় স্বামী। সৌমেনেরও একটি সংসার রয়েছে। সেই স্ত্রীর ঘরে এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। সৌমেন সংসার নিয়ে খুলনায় চাকরি করেন। আমার আপু আমাদের সঙ্গে কুষ্টিয়ার বাবরআলী গেট এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।
তিনি বলেন, মাঝেমধ্যেই সৌমেন আমাদের বাসায় এসে থাকতেন। প্রায়ই আপুর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার ও মারধর করতেন সৌমেন। কিছুদিন আগেও সৌমেন এসেছিলেন। সেদিনও মারধর করে চলে গেছেন খুলনায়।
নিহত আসমার মা হাসিনা খাতুন গণমাধ্যমকে বলেন, বছর পাঁচেক আগে যখন সৌমেন কুমারখালী থানায় কর্মরত ছিল তখন আমরা একটি মামলায় পড়ি। সেই সূত্রে আমার মেয়ের সঙ্গে সোমেনের প্রেমের সম্পর্ক হয়। এরপর বিয়ে হয়।
ফুলতলা থানা সূত্রে জানা গেছে, সৌমেন খুলনা ফুলতলা থানার এসআই পদে কর্মরত আছেন। তবে ছুটি না নিয়েই তিনি কুষ্টিয়ায় গেছেন।
শাকিলের সঙ্গে আসমার অনৈতিক সম্পর্ক ছিল বলেও পুলিশের একটি সূত্রে খবর পাওয়া গেছে। সূত্রটি বলছে, অনৈতিক এ সম্পর্কের কথা জেনে যাওয়ায় সৌমেন এ হত্যাকাণ্ড ঘটান।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার তাপস কুমার সরকার বলেন, আসমাকে হাসপাতালে আনার আগেই মৃত্যু হয়েছে। বাকি দুজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।