ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় মৎস্য দপ্তরের ২২ দিনব্যাপী মা ইলিশ রক্ষায় গৃহীত নিষেধাজ্ঞার অভিযান শেষ হয়েছে। রোববার রাত ১২টার পর সাগর ও নদীতে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠানো হলেও, মৎস্য দপ্তরের অভিযানে যথেষ্ট ফলপ্রসূতা দেখা যায়নি বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয় জেলেরা।
নিষেধাজ্ঞার শেষ দিনগুলোর মধ্যে এক সপ্তাহ ধরে রাজাপুরের জেলেরা নিজেদের ট্রলার, জাল এবং অন্যান্য সরঞ্জাম প্রস্তুত করে ইলিশ শিকার করতে নদীতে জাল ফেলেছিলেন। তবে তারা জানান, কাঙ্ক্ষিত মাছের দেখা না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন। তারা মনে করেন, অভিযানের ঢিলেঢালা ব্যবস্থা এবং নদীতে কার্যকর মনিটরিংয়ের অভাবে মৌসুমী ইলিশ শিকার অব্যাহত ছিল।
স্থানীয় একাধিক জেলে অভিযোগ করেন, মৎস্য দপ্তরের অভিযানের সময় মৎস্য কর্মকর্তা গৌতম কুমার প্রভাবশালী হওয়ার কারণে অভিযানে সঠিকভাবে নজরদারি করেননি। তারা জানান, অনেক সময় অভিযানের সময় মৎস্য কর্মকর্তারা বা অন্য কর্মকর্তারা তাদের স্থানীয় আত্মীয় হওয়ায়, তাদের মাঝে লেনদেনের মাধ্যমে মাছ ধরার কাজ চালিয়ে যেতে দেওয়া হতো। এমনকি মৎস্য কর্মকর্তারা নাকি সচেতন থাকা সত্ত্বেও চোখে কিছু দেখতে পেতেন না, যে কারণে অবাধে ইলিশ শিকার চলতে থাকে।
এ বিষয়ে মৎস্য কর্মকর্তা গৌতম কুমার বলেন, "২২ দিনের এই অভিযানে মোট ৬১টি অভিযান পরিচালিত হয়েছে এবং ২১টি মোবাইল কোর্ট বসানো হয়েছে। এই সময়ে ১ লাখ ৮৪ হাজার ১০০ মিটার জাল জব্দ করা হয়েছে, যার মূল্য ২৪ লাখ ৮০ হাজার ৫০০ টাকা। পাশাপাশি ১৮০ কেজি ইলিশও জব্দ করা হয়েছে, যা স্থানীয় এতিমখানায় প্রদান করা হয়েছে।" তবে তিনি অভিযানের ঢিলেঢালা হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং জানান যে, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
এদিকে, স্থানীয় জনগণ এবং জেলেরা দাবি করেন, মৎস্য দপ্তরের কঠোর নজরদারির অভাবের কারণে মৌসুমী ইলিশ শিকার অব্যাহত ছিল এবং এতে পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। তারা আশা করেন, আগামী দিনে আরও কার্যকর এবং গতিশীল অভিযানের মাধ্যমে ইলিশ রক্ষা সম্ভব হবে।
এছাড়া, স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করেন, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যথাযথ অভিযান চালানো হলে ইলিশের প্রজনন নিরাপদ থাকতে পারে এবং স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রা সুরক্ষিত থাকবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।