নারায়ণগঞ্জের কাশিপুরের হাজারখানেক মানুষ খাদ্য সহায়তার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। তাদের অভিযোগ, কাশিপুর ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ও প্যানেল চেয়ারম্যান আয়ুব আলী গত ১৫ দিনে কোনো খাদ্য সহায়তা বিতরণ করেননি। তাদের অভুক্ত দিন গুজার করার অবস্থা হয়েছে।
নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার প্রতিরোধে সরকার সাধারণ ছুটি দুই দফায় বাড়িয়ে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত করেছে। এর মধ্যে কয়েক দিনের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে ৬ জনের মৃত্যু হওয়ায় আজ বুধবার নারায়ণগঞ্জকে ‘সম্পূর্ণ লকডাউন’ ঘোষণা করে বিবৃতিতে দিয়েছে সশস্ত্র বাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
এছাড়া গত শুক্রবার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা মারা যাওয়ার পর ওই এলাকায় তিনশ পরিবারকে কোয়ারেন্টিনের আওতায় রাখা হয়েছে। আর কাশিপুরের এই ওয়ার্ডেই নিম্ন আয়ের মানুষের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। সব ধরনের অর্থনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় এই ওয়ার্ডের শ্রমজীবী মানুষ বিপাকে পড়েছ্নে। অনেকের ঘরেই এখন চাল নেই। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় মেম্বার চেয়ারম্যানরা গত ১৫ দিনেও এখানে কোনো সরকারি খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেনি। এ কারণে আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। পরে পুলিশের আশ্বাসে তারা ঘরে ফেরেন।বিক্ষোভকারীরা বলেন, ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার ও প্যানেল চেয়ারম্যান আইয়ুব আলীর খাদ্য সামগ্রী দেয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে ভোটার আইডি কার্ড নিয়েছেন। কিন্তু খাদ্য সামগ্রী নিতে গেলে তারা বলেন, সরকার খাবার দিয়েছে ২০০ মানুষের জন্য। আসছেন আপনারা এক হাজার মানুষ। এতো মানুষের খাবার কোথা থেকে দিব।
বিক্ষোভে যোগ দেয়া এক বৃদ্ধা বলেন, আমি চাউল আনতে গেছি, মেম্বার রাত ১০ পর্যন্ত আমাকে বসিয়ে রেখে বলে সকালে আসেন। সকালে গেলে বলে সরকারি চাউল নাই। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমরা ঘরে খাবার নাই। পেটে ভাত না দিতে পারলে লকডাউন দিয়ে কী হবে!এ ব্যাপারে কাশিপুর ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আয়ুব আলীর সেলফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি জবাব দেননি।জানতে চাইলে কাশিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ বাদল বলেন, কাশিপুর ইউনিয়নে সরকারি বরাদ্দ আসা এক হাজার পরিবারের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। কাশিপুর ওয়ার্ডের সুচিন্তানগর ও আমবাগানে লকডাউনে থাকা ২শ পরিবারের মধ্যে এরই মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
তার অভিযোগ, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কতিপয় বিএনপি নেতা আজ খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হবে বলে মানুষজনকে উসকে দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করিয়েছে। পর্যায়কক্রমে সব জায়গায় সরকারি খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।ইউএনওর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ মার্চ নারায়ণগঞ্জ জেলার জন্য ৭৫ টন চাল ও ৯ লাখ নগদ টাকা ৭ হাজার ৫শ পরিবারের জন্য বরাদ্দ আসে। এরপর ২শ টন চাল ও ২ লাখ টাকা নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার জন্য আসে।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা বারিকের সেলফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি জবাব দেননি।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।