খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসারত এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসকরা সন্দেহ করছেন, তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। তার জ্বর ও শ্বাস কষ্ট ছিলো। বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) বিকেলে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন চিকিৎসকরা।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী রেজিস্টার ডা. সুব্রত সরকার জানান, বুধবার রাত আড়াইটায় থাইরয়েডে ক্যান্সারে আক্রান্ত এক রোগী খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি হন। থাইরয়েডে অপারেশনের কারণে তার গলায় ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়েছিলো। রাতে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টায় তিনি মারা যান। এসময় তার শরীরে জ্বর ও শ্বাস কষ্ট ছিলো। তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন।
এদিকে হাসপাতালের পরিচালক ডা. এ টি এম মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, ওই রোগীর জ্বর ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়ার পর চিকিৎসকরা তার চিকিৎসা সংক্রান্ত পূর্ববর্তী তথ্য নেন। এই হাসপাতালে আসার আগে ওই রোগী ঢাকার মডার্ন হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন। একই আইসিইউতে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত একজন রোগী মারা গিয়েছিল। কিন্তু ওই রোগী এখানে ভর্তির সময় সেই তথ্য গোপন করেন। তা না হলে তাকে করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হতো।
ডা. মোর্শেদ আরও বলেন, ওই রোগীকে মডার্ন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়ার পর হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলেছিল। কিন্তু তিনি তা মানেননি এবং তথ্য গোপন করে এখানে ভর্তি হন। তার কারণে ঝুঁকি বেড়ে গেল। হাসপাতালের পরিচালক বলছেন, ওই রোগীকে চিকিৎসা দেয়া ১৫/২০ জন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হচ্ছে। ৯০ শতাংশ সন্দেহ ওই রোগী করোনায় আক্রান্ত ছিলেন।
খুমেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ফোকাল পয়েন্ট ডা. শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, ঢাকার মডার্ন হাসপাতাল থেকে থাইরয়েড অপারেশন করে পোস্ট অপারেটিভ চিকিৎসার জন্য এক রোগী খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসে। বুধবার রাত আড়াইটার দিকে তাকে হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে তার জ্বর ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। প্রথমে সবাই ভেবেছিল অপারেশনের কারণে হয়তো এ রকম হচ্ছে। দুপুর দেড়টার দিকে তিনি মারা যান। এদিকে খুলনা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে মারা যাওয়া ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করতে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিম খুলনায় এসেছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যশোর থেকে তারা খুলনায় এসে পৌঁছেছেন।
খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ জানান, স্বাস্থ্য বিভাগের ঢাকার টিমটি আগে থেকে যশোর অবস্থান করছিল। এই নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত তার ওই ব্যক্তির খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পলিথিন মুড়িয়ে রাখা হবে। রিপোর্ট পাওয়ার পর নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।