একসাথে আসলো ৫৮০ টন পেঁয়াজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২৬শে নভেম্বর ২০১৯ ০৯:৩৭ অপরাহ্ন
একসাথে আসলো ৫৮০ টন পেঁয়াজ

বাজার নিয়ন্ত্রণে বড় শিল্পগ্রুপগুলোকে পেঁয়াজ আমদানির অনুরোধ করে সরকার। তাতে সাড়া দিয়ে সবচে বেশি পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি (আইপি) নেয় এস আলম গ্রুপ। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই সেই পেঁয়াজ দেশের আনার ঘোষণা দিয়ে বানিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছিলেন, এরপর পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৮০ টাকায় নেমে আসবে। কিন্তু আজ ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত সেই পেঁয়াজ দেশে পৌঁছেনি। এস আলমের পাশাপাশি সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপের পেঁয়াজও দেশে পৌঁছেনি। 

এই অবস্থায় এক সাথে ৫৮০ টন পেঁয়াজ নিয়ে এসেছে ভোগ্যপণ্য আমদানির শীর্ষ গ্রুপ চট্টগ্রামভিত্তিক বিএসএম গ্রুপ। চীন থেকে ‘এমসিসি থাইপে’ জাহাজে ২০টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কন্টেইনারে এসব পেঁয়াজ গত সোমবার সকালে পৌঁছে চট্টগ্রাম বন্দরের সাধারন কন্টেইনার জেটি জিসিবিতে। মঙ্গলবার রাতে এসব পেঁয়াজ বন্দর থেকে ছাড় হয়ে বুধবার সকালেই বাজারে পৌঁছবে। পেঁয়াজের বাজারে সরবরাহ সংকট ও অস্থিরতা সৃষ্টির পর থেকে একসাথে এত বিপুল পেঁয়াজ আমদানির ঘটনা এই প্রথম।

জানতে চাইলে বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী বলেন, আমরা ভোগ্যপণ্য আমদানিতে জড়িত, পেঁয়াজ আমদানি করি না। দেশের এই পরিস্থিতিতে সরকারের অনুরোধে সাড়া দিয়ে আমরা এই পেঁয়াজ আমদানি করেছি। আমাদের কাছে এই মুহূর্তে মুনাফা বড় বিষয় নয়; পেঁয়াজ সংকটে সরবরাহ বাড়ানোই লক্ষ।

ভোগ্যপণ্যের অভিজ্ঞ এই ব্যবসায়ী বলেন, আমরা প্রথম দফায় চীন থেকে ৮শ টন পেঁয়াজ আমদানির ঋণপত্র খুলেছি। এরমধ্যে ৫৮০ টন সোমবার পৌঁছলো, বাকি ২২০ টন পৌঁছবে ৩০ নভেম্বর। এছাড়া মিসর থেকে আরও পেঁয়াজের চালান জাহাজে তোলা হচ্ছে; শিগগিরই চট্টগ্রামে পৌঁছবে সেই চালান।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানির জন্য ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত ৮৩ হাজার ৬২৫ টনের আমদানি সনদ বা আইপি নিয়েছেন আমদানিকারকরা। এরমধ্যে শুধু এস আলম গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সোনালী ট্রেডিং নিয়েছে ৬৪ হাজার টন। কিন্তু তাদের পেঁয়াজ এখনও চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেনি। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তাদের পেঁয়াজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছবে। প্রথম চালানে মিসর থেকে পৌঁছবে ২ হাজার টন এবং তুরস্ক থেকে খোলা জাহাজে আসছে ১০ হাজার টন। এছাড়া সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপও দুই হাজার টন করে পেঁয়াজ আমদানি করেছে; যেগুলো এই সপ্তাহের মধ্যেই পৌঁছবে। 

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, এস আলম গ্রুপের বড় চালান আসবে আসবে করেই দেশে পেঁয়াজের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আসা পেঁয়াজ নভেম্বরের শেষেও দেশে পৌঁছেনি। অথচ ২ নভেম্বর আমদানি সনদ নিয়ে ২৪ দিনের মাথায় চট্টগ্রামে পৌঁছলো বিএসএম গ্রুপের এর পেঁয়াজ; এটা সরকারকে দেয়া বড় কমিটমেন্ট। বড় চালানের আমদানি দেশে পৌঁছায় অবশ্যই বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।  খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা এখনও জানেন না এতবড় একটি চালান চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। এই চালান আগামীকাল বুধবার সকালে বাজারে পৌঁছলে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জ কাঁচাপণ্য আড়তদার সমিতির সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, রবি ও সোমবারের তুলনায় আজ মঙ্গলবার বাজারে সব পেঁয়াজ কেজি ২০ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে। আজ আড়তে মিয়ানমারের পেঁয়াজ কেজি ১৬০-১৭০ টাকা, চীনের পেঁয়াজ ১শ টাকা, মিসরের পেঁয়াজ ১২০-১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গতকাল ৩০ ট্রাক পেঁয়াজ এসেছে খাতুনগঞ্জে; কিন্তু ক্রেতা কমে যাওয়ায় দাম কমেছে। 

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব