সামিট গ্রুপের ১৯১টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: রবিবার ৯ই মার্চ ২০২৫ ০৪:৪৮ অপরাহ্ন
সামিট গ্রুপের ১৯১টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে সামিট গ্রুপের ১৯১টি ব্যাংক হিসাবে থাকা প্রায় ৪২ কোটি টাকা ফ্রিজের (অবরুদ্ধ) আদেশ দিয়েছেন ঢাকার আদালত। গোপালগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফারুক খানের ভাই সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান, তার পরিবার এবং স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের নামে এসব ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে।


রোববার (৯ মার্চ) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এ আদেশ দেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই আদেশ দিয়েছেন। আদালত সূত্রে জানা গেছে, দুদকের উপ-পরিচালক আলমগীর হোসেন এসব ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার জন্য আবেদন করেন।


আবেদনে বলা হয়, সামিট গ্রুপ ও তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, ঘুষ-দুর্নীতি মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ। অনুসন্ধানের সময়ে তাদের নামে সঞ্চয়ী, এফডিআর এবং অন্যান্য ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাওয়া যায়, যেগুলোর মধ্যে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা রয়েছে।


এই হিসাবগুলোতে থাকা অর্থের পরিমাণ অস্বাভাবিক এবং সন্দেহজনক হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। দুদক মনে করে, যেকোনো সময় এই অর্থগুলো উত্তোলন করে বিদেশে পাচার বা গোপন করার আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য অনুসন্ধানের স্বার্থে এসব হিসাব অবরুদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।


দুদক অভিযোগ করে, সামিট গ্রুপের নামে এসব ব্যাংক একাউন্টে ৪১ কোটি ৭৪ লাখ ৭০০ টাকা জমা রয়েছে। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ১৪ ধারা অনুযায়ী এসব অর্থ অবরুদ্ধ করার জন্য আদালতকে আবেদন করা হয়েছিল। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করে ১৯১টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ রাখার আদেশ দেন।


এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। তদন্তে নতুন তথ্য পাওয়ার পর আরও পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে দুদক। সামিট গ্রুপের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তদন্ত চলছে, এবং ফ্রিজ করা অর্থ উদ্ধার হলে তা জনগণের কল্যাণে ব্যবহৃত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।


এছাড়া, আদালত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর সামিট গ্রুপের প্রতিনিধিরা এখনও কোন মন্তব্য করেননি। তবে, এই ঘটনা দেশের অর্থনৈতিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার আরও কঠোর পদক্ষেপের প্রতিফলন হিসেবে দেখা হচ্ছে।