বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ পেলেন ইলন মাস্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: রবিবার ২৩শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৫:০১ অপরাহ্ন
বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ পেলেন ইলন মাস্ক

স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একইসঙ্গে তিনি আগামী ৯০ কর্মদিবসের মধ্যে বাংলাদেশে স্টারলিংক স্যাটেলাইট সেবা চালুর প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে পাঠানো এক চিঠির সূত্র ধরে রোববার এই তথ্য জানা গেছে। চিঠিটি গত বৃহস্পতিবার মাস্কের কাছে পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ সফরের মাধ্যমে মাস্ক তরুণ নারী-পুরুষদের সাথে সাক্ষাৎ করতে পারবেন, যারা এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির অন্যতম সুবিধাভোগী হবে।  


ড. ইউনূস তার চিঠিতে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের অবকাঠামোতে স্টারলিংকের সংযোগ অন্তর্ভুক্ত করা একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে। বিশেষ করে উদ্যমী তরুণ সমাজ, গ্রামীণ ও প্রান্তিক নারীদের পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য এটি বড় সুযোগ সৃষ্টি করবে। এছাড়া তিনি বলেন, উন্নতমানের ইন্টারনেট সংযোগ দেশের অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ব্যবসার ক্ষেত্রে এই সেবা নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।  


প্রধান উপদেষ্টা তার উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমানকে স্পেসএক্স দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করতে নির্দেশ দিয়েছেন। যাতে প্রয়োজনীয় কাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন করা যায় এবং নির্ধারিত ৯০ কর্মদিবসের মধ্যেই বাংলাদেশে স্টারলিংক সেবা চালু করা সম্ভব হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে এবং এই উদ্যোগ সফল করতে বিভিন্ন প্রযুক্তিগত দিক পরীক্ষা করা হচ্ছে।  


এর আগে, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ইলন মাস্কের সঙ্গে এক দীর্ঘ টেলিফোন আলোচনায় অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা। এতে তারা ভবিষ্যৎ সহযোগিতার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন এবং বাংলাদেশে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা চালুর সম্ভাবনা নিয়ে মতবিনিময় করেন। এই আলোচনায় বাংলাদেশে ডিজিটাল সংযোগ বৃদ্ধির উপায় এবং নতুন প্রযুক্তির সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা হয়।  


বাংলাদেশ সরকার এরই মধ্যে প্রযুক্তি খাতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নিয়েছে। স্টারলিংক পরিষেবা চালু হলে প্রত্যন্ত এলাকায় উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ সহজ হবে, যা দেশব্যাপী ডিজিটাল বিভাজন কমাতে সহায়ক হবে। এছাড়া কৃষি, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা খাতে এই প্রযুক্তির প্রভাব ব্যাপক হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।  


বিশেষজ্ঞদের মতে, স্টারলিংক চালু হলে বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতে একটি নতুন মাত্রা যোগ হবে। বিশেষ করে দুর্যোগপ্রবণ ও দুর্গম অঞ্চলে যেখানে প্রচলিত ইন্টারনেট সেবা পৌঁছানো সম্ভব নয়, সেখানে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। তবে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রযুক্তিগত ও প্রশাসনিক কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যা দ্রুত সমাধান করতে হবে।  


ইলন মাস্ক এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে তার প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্টারলিংক সেবা সম্প্রসারণে কাজ করছে। বাংলাদেশে এই সেবা চালু হলে এটি দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বড় অর্জন হিসেবে বিবেচিত হবে। এখন দেখার বিষয়, ইলন মাস্ক কবে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন এবং স্টারলিংক প্রকল্প কত দ্রুত বাস্তবায়িত হয়।