রমজানকে সামনে রেখে হিলি স্থলবন্দরে ভোগ্যপণ্য আমদানি বৃদ্ধি

নিজস্ব প্রতিবেদক
গোলাম রব্বানী, উপজেলা প্রতিনিধি হিলি (দিনাজপুর)
প্রকাশিত: সোমবার ৬ই মার্চ ২০২৩ ০৭:০৪ অপরাহ্ন
রমজানকে সামনে রেখে হিলি স্থলবন্দরে ভোগ্যপণ্য আমদানি বৃদ্ধি

আর মাত্র কয়েক দিন পরে পবিত্র মাহে রমজান মাস। রোজার মাসকে সামনে রেখে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বেড়েছে মসলাসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য আমদানি। প্রতিদিন ভারত থেকে আসছে  পেঁয়াজ-রসুন-জিরা-এলাচ ও আদাসহ বিভিন্ন মসলাবোঝাই ট্রাক। ডলার সংকট ও এলসি খোলার জটিলতার কারণে বন্দর দিয়ে আমদানি কম ছিলো।


বন্দরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারত থেকে এরইমধ্যে ছোলা, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, মসলাসহ রমজানে চাহিদা বাড়ে এমন পণ্য আমদানি বেড়েছে। গত কয়েক মাস আগে এসব পণ্য দু-এক ট্রাক আমদানি হলেও এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কয়েক ট্রাকে। হিলি বাজারে প্রতি কেজি থাইল্যান্ডের ছোলা ৯০ টাকা ও অস্ট্রেলিয়া ছোলা ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ভারতীয় ছোলার দাম একটু কমে ৭৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


হিলি বন্দরের ব্যবসায়ী আজমল হোসেন জানান,চাহিদার বিপরীতে পর্যাপ্ত ঋণপত্র খোলা হচ্ছে। আমদানি স্বাভাবিক থাকলে আসন্ন রমজানে তেমন নিত্যপণ্যের সংকট হবে না। খোলাবাজারে পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকবে। তাই দাম বাড়ার তেমন শঙ্কাও নেই। বর্তমানে ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৭৭ থেকে ৭৮ টাকা এবং মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকা কেজি দরে।


হিলি বন্দরের আমদানিকারক শাহিনুর রেজা শাহিন জানান, ডলার সংকট ও এলসি জটিলতার কারণে হিলি স্থলবন্দরে কিছুদিন আগেও আমদানি কম ছিল। তবে, রোজার মাসকে সামনে রেখে এই বন্দর দিয়ে প্রতিদিনই যুক্ত হচ্ছে নতুন পণ্য। রোজায় ভোগ্যপণ্যের দাম নাগালে রাখতে আমদানির প্রস্তুতি নিয়েছেন হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা। যারফলে ব্যাংকগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ এলসি খুলেছেন আমদানিকারকরা।


হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানি গ্রুপের সভাপতি হারুন-উর-রশিদ হারুন জানান, এই পণ্যগুলোর চাহিদা সাধারণত রোজার মাস ও ঈদুল আজহার আগেই বেশি হয়। তাই আমদানিও বাড়ে।  ইতোমধ্যেই এই বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ছোলা, মসুর ডাল, পেঁয়াজ, জিরা, আদা, রসুন, এলাচ ও বাদামসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য আমদানি শুরু করেছেন আমদানিকারকেরা। এভাবে আমদানি অব্যাহত থাকলে রমজান মাসে  আমদানি নির্ভর পণ্যের দাম ক্রেতার নাগালে রাখা সম্ভব হবে। পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয়ও কয়েকগুণ বেড়ে যাবে বলে জানান তিনি।


হিলি ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের শাখা ব্যবস্থাপক আরশাদ হোসেন জানান, এখনো সব ব্যাংক এলসি দিতে পারছে না। ডলার সংকট থাকার কারণে শতভাগ মার্জিন দিয়ে এলসি করতে হবে।


পানামা হিলি পোর্ট লিংক লিমিডেটের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাপ জানান, প্রতিবছরের মতো এবারও রমজানকে সামনে রেখে হিলি বন্দর দিয়ে আমদানিকারকরা বেশি করে মসলাসহ ভোগ্যপণ্য আমদানি শুরু করেছেন। এসব পণ্য যেন  দ্রুত খালাস করা যায়, সেজন্য পানামা পোর্টের ভেতরে আলাদা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।


হিলি কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, হিলি বন্দর দিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দুই মাসে ৯০ মেট্রিক টন ছোলা, ৪ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ, ৩৭৬ মেট্রিক টন মসুর ডাল, ১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন জিরা, ৫ মেট্রিক টন এলাচ , ২৫৮ মেট্রিক টন আদা, ২৪০ মেট্রিক টন রসুন আমদানি হয়েছে ।