দেশে চিনির বাজারে চলমান সরবরাহ সংকটের কথা কারও অজানা নয়। গত বছরের এই সময়ে চিনির প্রতি কেজি ৭৫ টাকায় পাওয়া যেত। তবে এখন চিনির দাম বেড়ে ১২০ টাকা হলেও কোথাও কোথাও চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে শুল্ক জটিলতার কারণে ১ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন চিনি দেড় মাস ধরে বেনাপোল বন্দরে আটকে আছে।
চিনি খালাস না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ভারতীয় ট্রাকচালকেরা। তারা দেড় মাস ধরে বন্দরের মধ্যে মানবতা জীবন যাপন করছেন।
বেনাপোল শুল্ক কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর সেতু এন্টারপ্রাইজ ভারত থেকে ছয়টি চালানে ৮৪ ট্রাকে ২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চিনি আমদানি করে। প্রতি মেট্রিক টন ৪৩০ ডলার মূল্যে সরকার নির্ধারিত ট্যারিফ মূল্য পরিশোধ করে বন্দর থেকে ১ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন চিনি খালাস করা হয়।
এরপর আমদানিকারক কম মূল্য দেখিয়ে চিনি আমদানি করে সরকারের শুল্ক ফাঁকি দিচ্ছে বলে বাংলাদেশ সুগার রিফাইনারি অ্যাসোসিয়েশন অভিযোগ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে। তখন শুল্ক কর্তৃপক্ষ ৪২ ট্রাকে থাকা পরের তিনটি চালানের ১ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন চিনি খালাসে বাধা দিয়ে ট্যারিফ বাড়িয়ে প্রতি টন ৫৭০ ডলার ধরে। কিন্তু লোকসান হওয়ার কথা তুলে ধরে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান পণ্য ছাড় করাচ্ছে না।
আমদানিকারকের প্রতিনিধি সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ বলেন, ভারত থেকে প্রতি টন চিনি ৪৩০ ডলার মূল্যে বেনাপোল বন্দর পর্যন্ত আমদানিতে খরচ পড়েছে ১০১ টাকা। কিন্তু ৫৭০ ডলার শুল্ক পরিশোধ করলে বেনাপোল বন্দর পর্যন্ত এ চিনির আমদানি খরচ পড়বে ১২০ টাকা। তখন বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি দামে তাকে চিনি বিক্রি করতে হবে। এ জন্য চিনি খালাস নিতে পারছি না।
এছাড়াও প্রতিদিন ভারতীয় ট্রাক ভাড়া বাবদ প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ গুনতে হচ্ছে। সেই হিসেবে এখন চিনির মূল্য বেড়ে দাঁড়াবে কেজি প্রতি ১৫০ টাকা।
এদিকে, দেড় মাস বেনাপোল বন্দরের মধ্যে ভারতীয় ট্রাকের মধ্যে থাকা চিনি গরমে নষ্ট হওয়ার পথে।
প্রতিবছর দেশে চিনির যে চাহিদা রয়েছে তার মাত্র ১০ শতাংশ দেশে উৎপাদন হয়। বাকি ৯০ শতাংশের চাহিদা আমদানি করে মেটাতে হয়। রোজা সামনে রেখে ভারত থেকে আমদানি হচ্ছে চিনি।
এ বিষয়ে বেনাপোল কাস্টমসের নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনৈক কর্মকর্তা বলেন, চিনির তিনটি চালান বৈধ পন্থায় বন্দর থেকে খালাস হয়েছে। তবে যেহেতু আমদানি মূল্য বাড়ানোর বিষয়ে একটি চিঠি এসেছে। বিষয়টি কাস্টমসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে জানালে আমরা খালাসের নির্দেশ দিয়ে দিব।
বেনাপোল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল বলেন, কাস্টমস শুল্কায়ন শেষ করলে চিনি ছাড় হবে বন্দর থেকে। এখনও ১ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন চিনি বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।