তাবলীগ জামাতের দুই শীর্ষ নেতা মাওলানা সাদ এবং মাওলানা জুবায়েরপন্থীদের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকালে সাদপন্থীরা কাকরাইল মসজিদে প্রবেশের ঘোষণা দিলেও, সকাল ৮টা পর্যন্ত তারা মসজিদে প্রবেশ করতে পারেনি। এ ঘটনায় কাকরাইল মসজিদে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর করা হয়।
তাবলীগ জামাতের মধ্যে এই বিভেদ নতুন নয়। ২০১৭ সালে কাকরাইল মসজিদে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে, যা পরবর্তীতে প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে রূপ নেয়। এরপর থেকে কাকরাইল মসজিদের একটি অংশে জুবায়েরপন্থিরা ১২ মাস ধরে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন, আর সাদপন্থিরা পর্যায়ক্রমে দুই সপ্তাহ করে তাদের কার্যক্রম চালায়। কিন্তু, গত সাত বছরে কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার মাঠে দুই পক্ষের বিরোধ তীব্র হয়েছে।
৫৮তম বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে গত ৪ নভেম্বর সচিবালয়ে একটি বৈঠক হয়, যেখানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, ইজতেমা দুই দফায় অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম দফা শুরু হবে ৩১ জানুয়ারি এবং দ্বিতীয় দফা শুরু হবে ৭ ফেব্রুয়ারি। তবে সাদপন্থী ও জুবায়েরপন্থীদের মধ্যে ইজতেমা আয়োজনে দ্বন্দ্ব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক সমাবেশে মাওলানা জুবায়ের অনুসারীরা ঘোষণা দেন, “দেশে একবারই ইজতেমা হবে, দু’বার নয়।” তারা জানিয়ে দেন, কাকরাইল মসজিদে সাদপন্থীদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।
এদিকে, সাদপন্থি ইমাম মুফতি আজিমুদ্দিন এক ভিডিও বার্তায় কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের কাকরাইল মসজিদে না আসার আহ্বান জানান। এর পরেই, গত মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে জুবায়েরপন্থিরা সাদপন্থিদের মসজিদে প্রবেশ করতে না দেওয়ার ঘোষণা দেন।
এই দ্বন্দ্বের পেছনে রাজনৈতিক প্রভাবের অভিযোগও রয়েছে। সাদপন্থিরা দাবি করছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সমর্থনপুষ্ট জুবায়েরপন্থিরা বেশি সুবিধা পাচ্ছেন। তাদের অভিযোগ, মসজিদের ব্যবস্থাপনায় এবং টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে জুবায়েরপন্থিরা কর্তৃত্ব বজায় রেখেছেন।
সাদপন্থি ও জুবায়েরপন্থিদের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা এবং এর ফলস্বরূপ মসজিদে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসন কীভাবে দ্বন্দ্ব সমাধানে সফল হয়, তা এখন দেখার বিষয়।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।