প্রকাশ: ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪২
ছয় বছর পর আবারও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। দীর্ঘ বিরতির পর এই নির্বাচন ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সৃষ্টি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। সোমবার ছিল প্রচারণার শেষ দিন, এখন শিক্ষার্থীরা অপেক্ষায় আছেন আগামীকাল মঙ্গলবারের ভোটগ্রহণের জন্য।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৮টি কেন্দ্রে ৮১০টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবার মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৭৭৫ জন। এর মধ্যে ছাত্র ২০ হাজার ৮৭৩ জন এবং ছাত্রী ১৮ হাজার ৯০২ জন। ২৮টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ৪৭১ জন প্রার্থী, এর মধ্যে নারী প্রার্থী আছেন ৬২ জন।
বিশেষ দিক হলো দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা এবার প্রথমবারের মতো ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। সহযোগী রিটার্নিং কর্মকর্তা শারমীন কবীর জানিয়েছেন, যেসব শিক্ষার্থী ব্রেইল পড়তে পারেন তাদের জন্য বিশেষ ব্যালট পেপার ছাপানো হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ করতে ঢাবি প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে নির্বাচন ঘিরে স্বচ্ছতা ও অনিয়ম রোধে শিক্ষক সংগঠন ইউটিএল ১০ দফা প্রস্তাব দিয়েছে। অন্যদিকে শিক্ষক নেটওয়ার্ক সংবাদ সম্মেলনে অনিয়মের আশঙ্কা জানিয়ে ১০টি দাবি উত্থাপন করেছে।
ভোটের দিন নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সোমবার বিকেল থেকে ঢাবি মেট্রো স্টেশন বন্ধ রাখা হবে। পাশাপাশি রাত ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রবেশপথও বন্ধ থাকবে। বৈধ আইডি কার্ডধারী শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই শুধু প্রবেশ করতে পারবেন।
এবারের নির্বাচনে নাটকীয় কিছু ঘটনাও ঘটেছে। শেষ মুহূর্তে এক ভিপি প্রার্থী ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলকে সমর্থন জানিয়ে প্রার্থীতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হলের ভিপিপ্রার্থী মাসুম বিল্লাল বলেছেন, তিনি নিজ ইচ্ছায় সরে দাঁড়িয়েছেন এবং দলের স্বার্থকে ব্যক্তিগত অবস্থানের চেয়ে বড় মনে করেছেন।
অন্যদিকে কয়েকটি জরিপে দাবি করা হয়েছে যে, শিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট এগিয়ে রয়েছে। তবে অন্য প্রার্থীরা এসব জরিপকে একপক্ষীয় ও ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা হিসেবে দেখছেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ছাত্রলীগ এবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না, যা প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবেশকে ভিন্ন রূপ দিয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, দীর্ঘদিন পর ডাকসু নির্বাচন হতে যাওয়ায় তারা আনন্দিত। নির্বাচনের প্রতি তাদের আগ্রহ ও অংশগ্রহণ ক্যাম্পাসে এক ধরনের উৎসবের আবহ তৈরি করেছে। আগামীকালকের ভোটের ফলাফলের দিকেই এখন তাকিয়ে আছেন সবাই।