সুন্দরবনে দুর্ধর্ষ দস্যু করিম শরীফ বাহিনীর হাতে অপহৃত ৬ নারী জেলেসহ ৩৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড। অপহরণের পর মুক্তিপণের দাবিতে তাদের গহীন বনে গোপন আস্তানায় আটকে রেখেছিল এই বনদস্যু চক্র।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছেন কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক। তিনি বলেন, দীর্ঘ অভিযান চালিয়ে অপহৃতদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সুন্দরবনের পশ্চিম বিভাগের করকরি নদীর মাল্লাখালী এলাকায় করিম শরীফ বাহিনীর অবস্থান এবং জেলে অপহরণের গোপন তথ্য পায় কোস্টগার্ড। এরপরই অপারেশন চালানোর প্রস্তুতি নেয় তারা।
গত বুধবার বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টানা অভিযান চালায় কোস্টগার্ডের সদস্যরা। অভিযানের এক পর্যায়ে কোস্টগার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে দস্যুরা ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে দ্রুত বনের ভেতরে পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল তল্লাশি চালিয়ে ৬ জন নারীসহ ৩৩ জন জেলেকে উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার অভিযান চালানোর সময় ১৬টি মাছ ধরার নৌকাও উদ্ধার করে কোস্টগার্ড। এসব নৌকায় করেই সুন্দরবনে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন জেলেরা। কিন্তু করিম শরীফ বাহিনী তাদের জিম্মি করে প্রত্যেকের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করেছিল।
উদ্ধার হওয়া জেলেরা জানিয়েছেন, বন বিভাগের অনুমতিপত্র নিয়েই তারা সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। কিন্তু দস্যু চক্র তাদের অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে গহীন বনে নিয়ে যায় এবং মারধর করে মুক্তিপণের চাপ দেয়।
উদ্ধারকৃতদের প্রথমে কোস্টগার্ড স্টেশন কয়রায় আনা হয়। সেখানে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও খাদ্য সরবরাহ করা হয়। বর্তমানে তাদের শারীরিক অবস্থা ভাল রয়েছে।
সবশেষে জানানো হয়েছে, উদ্ধার হওয়া সবাই খুলনা জেলার কয়রা থানার বাসিন্দা। তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার প্রস্তুতি চলছে। একই সঙ্গে বনদস্যুদের ধরতে সুন্দরবনে কোস্টগার্ডের বিশেষ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।