প্রকাশ: ১ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৬
খাগড়াছড়িতে অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে অচেতন করে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার তদন্তে নতুন মোড় এসেছে। মেডিকেল পরীক্ষায় ভুক্তভোগীর শরীরে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালে তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড এ পরীক্ষা সম্পন্ন করে। তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ভুক্তভোগীর শরীরের ভেতরে ও বাইরে কোনো ধরনের ধর্ষণের চিহ্ন নেই।
মেডিকেল বোর্ডের নেতৃত্বে থাকা সিনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি) ডা. জয়া চাকমা জানান, ধর্ষণের আলামত শনাক্ত করার জন্য নির্ধারিত ১০টি সূচক পরীক্ষা করা হয় এবং সবগুলোতেই স্বাভাবিক ফল পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে আরও স্বাক্ষর করেছেন চিকিৎসক ডা. মীর মোশারফ হোসেন ও ডা. নাহিদা আক্তার।
উল্লেখ্য, গত ২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি জেলা সদরের সিঙ্গিনালা এলাকায় ওই ছাত্রীকে অচেতন করে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। পরদিন ভুক্তভোগীর বাবা অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন শয়ন শীল নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করে।
ঘটনার পর পাহাড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ইউপিডিএফ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন খাগড়াছড়ি সেনানিবাসে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ। তিনি এটিকে একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ বলে উল্লেখ করেন।
গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল কালাম রানা বলেন, পাহাড়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সঙ্গে ইউপিডিএফ জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।
ঘটনার পর জুম্ম ছাত্র-জনতা অনির্দিষ্টকালের জন্য সড়ক অবরোধ ডাকলেও দুর্গাপূজা ও প্রশাসনের আশ্বাসে তা আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। তবে ইতোমধ্যেই সংঘাতে তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ বহু স্থানীয় মানুষ।
সহিংসতায় সরকারি অফিস, দোকানপাট, বসতঘর, গুদাম ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসন খাগড়াছড়ি জেলাজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করেছে।