প্রকাশ: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩:৭
ঝালকাঠির রাজাপুরে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার রাতে আয়োজিত আলোচনা সভায় তুমুল বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি তালুকদার আবুল কালাম আজাদ। তিনি আগামী বুধবার বিকাল ৩টায় ঘোষিত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী র্যালিতে আওয়ামী লীগ, চরমোনাই ও জামাতসহ সকলকে যোগদানের আহ্বান জানান। তার এই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই তা মুহূর্তে ভাইরাল হয় এবং স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি করে।
তৃণমূল বিএনপি নেতাদের একাংশ মনে করছেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মতো গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচিতে এ ধরনের অযাচিত মন্তব্য দলীয় ঐক্য ও কৌশলকে বিভ্রান্তির দিকে পরিচালিত করতে পারে। তাদের মতে, দায়িত্বশীল পদে থাকা নেতার জন্য রাজনৈতিকভাবে এ ধরনের মন্তব্য অগ্রহণযোগ্য। নেতারা বলছেন, দলীয় ভাবমূর্তির স্বার্থে সকল বক্তব্যের ক্ষেত্রে সংযম রাখা প্রয়োজন।
স্থানীয়রা এ ঘটনাকে বিএনপির আদর্শ ও সাংগঠনিক নীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা হিসেবে দেখছেন। তারা মনে করছেন, এমন মন্তব্যের কারণে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সুবিধা নিতে পারে এবং দলীয় সম্মান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে দলীয় অভ্যন্তরে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে এবং তর্ক-সমালোচনা অব্যাহত রয়েছে।
উপজেলা বিএনপির অন্যান্য নেতাদের মধ্যে এই বিষয়ে ভিন্নমত থাকলেও আলোচনার ঝড় থামেনি। অনেকেই মন্তব্য করেছেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মতো আনন্দঘন আয়োজনকে কেন্দ্র করে এ ধরনের মন্তব্য দলের ভাবমূর্তির জন্য হুমকি স্বরূপ। দলের অভ্যন্তরে নীতিগত ও কার্যকরী দিকগুলো নিয়ে আলোচনার প্রয়োজনীয়তাও শোনা যাচ্ছে।
ঝালকাঠি জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাডঃ শাহাদাৎ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ, জামাত এবং চরমোনাইকে র্যালিতে যোগদানের দায় জেলা বা উপজেলা বিএনপি কাউকে দেয়নি। তিনি আরও জানান, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদককে দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে পদ স্থগিত করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে কোন এক নেতার ব্যক্তিগত উদ্যোগে এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, যার দায় দল গ্রহণ করবে না।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি তালুকদার আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তিনি যদি মন্তব্য প্রকাশ করতেন, তবে স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও স্পষ্ট হতো। দলীয় নেতারা আশা করছেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টি হবে না এবং সকল কার্যক্রমের ক্ষেত্রে দলের নীতি ও নির্দেশনাকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।
এ ঘটনায় স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও সাধারণ জনগণও উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, নেতাদের ব্যক্তিগত বক্তব্যের কারণে দলের ভাবমূর্তিতে প্রভাব পড়তে পারে, তাই সকলকে সংযমী আচরণ করতে হবে। আগামী র্যালি ও অনুষ্ঠানের নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসনও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।