আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩৭টিতে নিজেদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে। তবে এখনও ৬৩টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি। সোমবার রাতে প্রকাশিত তালিকা প্রকাশের পর থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে—বিশেষ করে এসব আসনের ভবিষ্যত মনোনয়ন নিয়ে।
দলীয় সূত্রগুলো বলেছে, ফাঁকা রাখা আসনগুলোর একটি বড় অংশ সমমনা ও শরিক রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য বরাদ্দ হতে পারে। কারণ ২০২২ সাল থেকে বিএনপির নেতৃত্বে যে যুগপৎ আন্দোলন চলেছিল, তাতে যুক্ত থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর ‘ভূমিকা ও দাবি’ বিবেচনায় দলটি আসন ভাগাভাগির নীতি অনুসরণ করতে চাইছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সোমবার বলেন, ‘যারা আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করেছেন, যেসব আসনে তাদের আগ্রহ রয়েছে—সেসব আসনে আমরা প্রার্থী দিইনি। তারা নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করলে, পরবর্তীতে আমরা জোটগতভাবে সেটি চূড়ান্ত করবো।’
ফাঁকা রাখা আসনগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ দু’টি কেন্দ্র—ঢাকা-১৩ ও ঢাকা-১৭। ইতোমধ্যে ঢাকা-১৩ আসনে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বিএনপির মৌখিক ‘গ্রিন সিগন্যাল’ নিয়ে প্রচারণায় নেমেছেন। তিনি বলেছেন, ‘জোট ঘোষণা হলে আনুষ্ঠানিকভাবেই সেটা জানানো হবে। তবে আমাকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে বলেই আমি প্রচারণায় নেমেছি।’
এছাড়া ঢাকার গুলশান-বনানীতে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি নির্বাচনে লড়বেন বলেও নিশ্চিত করেছেন। তবে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের অংশ বড় বিরোধিতাও সেখানে রয়েছে।
চট্টগ্রাম-১৪ আসনে এলডিপির সভাপতি অলি আহমদের ছেলে ওমর ফারুক, বগুড়া-২ আসনে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ঝালকাঠি-১ আসনে লেবার পার্টির ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান—এসব আসনেও বিএনপি কোনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি।
তবে প্রশ্ন উঠেছে—যেসব শরিক এই সমঝোতার ভিত্তিতে আসন পাচ্ছে, তারা কি শেষ পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গেই থাকবে?
কারণ, একই সময়ে এনসিপি বিএনপির মতো জামায়াতের সঙ্গেও আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা করছে। গণঅধিকার পরিষদও এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জোটে যোগ দেয়নি।
বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপি কৌশলগতভাবে দুটি বিষয় বিবেচনা করছে—
১) জোট রাজনীতিতে ভারসাম্য বজায় রাখা
২) প্রার্থী ঘোষণায় স্থানীয় মাঠপর্যায়ের সংঘাত ঠেকানো
এই কারণে ৬৩টি আসনের প্রার্থী তালিকা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।