প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৫, ১২:৮
কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদীর জলসীমা থেকে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হাতে স্থানীয় পাঁচ জন জেলে অপহরণ হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সন্ধ্যায় উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। অপহৃতরা হলেন মোঃ ইলিয়াস, তার দুই ছেলে আক্কল আলী ও নুর হোসেন, পাশাপাশি সাবের হোসেন ও সাইফুল ইসলাম। তারা সবাই টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহ পরীর দ্বীপের জালিয়া পাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিন জানান, আরাকান আর্মির সদস্যরা স্পিডবোটে অস্ত্রের মুখে তাদের ধরে নিয়ে গিয়েছে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় নাইক্ষ্যংদিয়ার কাছে। অপহৃতদের বর্তমানে কোথায় আছে বা তাদের কোন অবস্থান জানা যায়নি।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) তথ্য মতে, গত আট মাসে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী নাফ নদী সংলগ্ন এলাকা থেকে অন্তত ২৫১ জন জেলেকে আরাকান আর্মি অপহরণ করেছে। এর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ১৭৬ জন জেলে অপহৃত হয়েছেন। বিজিবির সহায়তায় কয়েক দফায় প্রায় ২০০ জন জেলেকে মুক্ত করানো হয়েছে।
এছাড়া এই ধরনের অপহরণের ঘটনা টেকনাফ ও নাফ নদীর আশেপাশের এলাকার মানুষের জীবনে ভয় ও অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে তুলেছে। জেলেরা দিন আনা দিন খাওয়া অবস্থায় জীবিকা নির্বাহ করেন, তাই তাদের অনুপস্থিতি এলাকায় গহীর্ণ প্রভাব ফেলেছে।
স্থানীয় প্রশাসন এবং নিরাপত্তা বাহিনী অপহৃত জেলেদের মুক্তির জন্য বিভিন্ন ধাপে কাজ করছে। তবে এই ধরনের অপহরণে সীমান্তবর্তী এলাকায় নিরাপত্তার চিত্র আরও সংকটাপন্ন হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই অপহরণের ঘটনা তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং দ্রুত মুক্তির জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। অপহৃতদের সুস্থ ও নিরাপদ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক যোগাযোগ আরও জোরদার করার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
সীমান্ত এলাকায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর দাপট বন্ধ করে জেলেদের নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। এই ধরনের অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ডের কারণে স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রায় বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে এবং সীমান্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা প্রয়োজন।
অপহৃত জেলেদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করা হয়েছে এবং তাদের দ্রুত মুক্তির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তৎপর থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।