প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬:৪১
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে পারিবারিক কলহের জেরে বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন জুলেখা বেগম (৪৫) নামের এক গৃহবধূ। অভিযোগ রয়েছে, স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে এবং নির্যাতনের কারণেই তিনি আত্মহননের পথ বেছে নিতে বাধ্য হন। বুধবার সকালে সদর ইউনিয়নের গন্ডাদুলা গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
নিহত জুলেখার স্বামী মো. বশার দফাদার (৪৫) এক বছর আগে গোপনে ১৯ বছর বয়সী কেয়া মনিকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করেন। এরপর থেকেই জুলেখার ওপর চলতে থাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। বুধবার সকালে ধান নেয়াকে কেন্দ্র করে স্বামী বশার ও দ্বিতীয় স্ত্রী কেয়া মনির সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন জুলেখা। একপর্যায়ে ক্ষোভে তিনি নিজ ঘরে গিয়ে বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে ফেলেন।
পরিবারের সদস্যরা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু কোড়ালিয়া স্পিডবোট ঘাটে পৌঁছার আগেই তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। স্থানীয়রা অভিযুক্তদের বাড়ি ঘেরাও করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং বশার ও কেয়াকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়।
জুলেখার বাবা আতাহার হাওলাদার বুধবার রাতেই রাঙ্গাবালী থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলার ভিত্তিতে গ্রেফতারকৃতদের বৃহস্পতিবার সকালে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই জুলেখা তার স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করে আসছিলেন। চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি তিনি নিজে বাদী হয়ে পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্বামী বশার, শ্বশুর শামসুল হকসহ সাতজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলায় যৌতুক দাবি, ভরণপোষণ না দেওয়া ও নির্যাতনের অভিযোগ করা হয়েছিল।
রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শামীম হাওলাদার জানান, নিহতের বাবার দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে আসামিদের গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মরদেহের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে পটুয়াখালী মর্গে।
এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় শোক ও ক্ষোভের ছায়া নেমে এসেছে। নিহতের পরিবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।