প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৫, ২১:৫০
পটুয়াখালীর বাউফলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলামের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপে বন্ধ হয়ে গেছে এক অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীর বাল্যবিবাহ। সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার নওমালা ইউনিয়নের বাবুর হাট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। জানা যায়, পূর্ব নওমালা গ্রামের আ. রাজ্জাকের ছেলে মো. ইব্রাহীম (১৫) এর সঙ্গে একই এলাকার জামাল হাওলাদারের মেয়ে জান্নাত আক্তার (১৩) এর বিয়ের আয়োজন চলছিল। এ সময় জান্নাত আক্তার স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিল।
বিয়ের খবর পেয়ে ইউএনও আমিনুল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে ওই বাল্যবিবাহের আয়োজন বন্ধ করে দেন। তিনি জানান, মেয়ের পরিবার এই বিয়েতে সম্মত ছিল না, বরং ছেলের পরিবার জোর করে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিল। পরে আইনানুগ ব্যবস্থা হিসেবে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৭ অনুযায়ী ছেলের পরিবারকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একইসঙ্গে তাদের কাছ থেকে ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজে জড়িত না থাকার মুচলেকা নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে ইউএনও বলেন, বাল্যবিবাহ একটি দণ্ডনীয় অপরাধ এবং এটি সমাজে নারীর অধিকার হরণ ও শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করার একটি গুরুতর চিত্র। তিনি আরও বলেন, প্রশাসন এ বিষয়ে সর্বদা সচেতন এবং প্রতিটি এমন ঘটনার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
এদিকে এলাকাবাসী ইউএনওর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, এ ধরনের সচেতনতা ও আইনি পদক্ষেপ না থাকলে হয়তো এত অল্প বয়সেই একটি মেয়ের শৈশব ও শিক্ষাজীবন থেমে যেত। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করায় সাধারণ মানুষ নিজেদের নিরাপদ ও সচেতন ভাবতে পারছে।
উল্লেখ্য, বাল্যবিবাহ রোধে স্থানীয় প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকার ফলে অনেক এলাকাতেই ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় আগ্রহ বাড়াতে এবং নারীর প্রতি সহিংসতা কমাতে এসব কার্যক্রম অপরিহার্য।
এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হলো, সামাজিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি আইনের যথাযথ প্রয়োগ থাকলে সমাজে বাল্যবিবাহের মতো ক্ষতিকর প্রবণতা প্রতিরোধ করা সম্ভব।