মসজিদে মাদরাসাছাত্রী হত্যাকাণ্ডে কাঁপছে সরাইল, মানববন্ধন

ঘটনাটি ঘটেছে সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের হাবলিপাড়া জামে মসজিদে। গত শনিবার বিকেলে মাদরাসা থেকে ফেরার পথে নিখোঁজ হয় শিশু ময়না। পরদিন রবিবার সকালে মসজিদের দ্বিতীয় তলায় একটি কক্ষ থেকে বিবস্ত্র ও রক্তাক্ত অবস্থায় গলায় কাপড় প্যাঁচানো অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর সন্দেহ মসজিদের ভেতরেই ছিল মূল রহস্য।

শিশুটির বাবা আব্দুর রাজ্জাক বাহরাইন প্রবাসী। তার দেশে ফেরার পর সোমবার (৭ জুলাই) বাদ আছর স্থানীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হয় জানাজা। শত শত মানুষ অশ্রুসিক্ত নয়নে জানাজায় অংশ নেয়। জানাজা পূর্ব বক্তৃতায় নিহতের চাচা সেলিম মিয়া বলেন, “আমাদের ময়নাকে যারা এমন নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

ইতোমধ্যে সরাইল থানা পুলিশের তদন্তে হত্যার পেছনে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশ, পিবিআই ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। নিহতের মা মোসা. লিফা আক্তার বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, মসজিদের ইমাম হামিদুর রহমান (৩৫) ও মোয়াজ্জিন সাইদুল ইসলাম (২৫) কে গ্রেফতার করা হয়েছে। সরাইল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার তপন সরকার বলেন, “এটি হৃদয়বিদারক হত্যাকাণ্ড। আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। দ্রুতই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।”

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সরাইল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিশ্বরোড মোড়ে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “ময়নাকে যারা হত্যা করেছে, তাদের ফাঁসি চাই। ন্যায়বিচার না পেলে বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে হবে।”

এ হত্যাকাণ্ড গোটা সমাজকে নাড়িয়ে দিয়েছে। মানুষ প্রশ্ন তুলছে—"ময়না কবরে, খুনি কেন বাহিরে?"