প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৫, ১৮:৪১
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে একটি পরিত্যক্ত টয়লেট থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় এক গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। নিহত রিমু আক্তার নামের ওই নারী নিখোঁজ ছিলেন গত সাত দিন ধরে। সোমবার সকালে খটশিংগা শিবরামবাটী এলাকায় একটি বসতবাড়ির পুরনো টয়লেট থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালে স্থানীয়রা তা দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে একটি বস্তার ভেতর থেকে রিমুর লাশ উদ্ধার করে এবং বিষয়টি নিশ্চিত হয়। নিহত রিমুর স্বামী দেলওয়ার হোসেন লিটনকে আটক করা হয়েছে। রিমু আক্তার পীরগঞ্জ উপজেলার একান্নপুর লক্ষিন্দর হাট এলাকার বাসিন্দা লিটনের স্ত্রী এবং তিনি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
রিমুর বাবা ইকরামুল হক গতকাল পীরগঞ্জ থানায় এসে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। মেয়ের কোনো খোঁজ না পেয়ে তিনি জামাতা লিটনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও সন্তোষজনক উত্তর পাননি। লিটন সব সময় দাবি করছিলেন, রিমু স্বাভাবিকভাবেই কোথাও চলে গেছেন। এরপর আজ সকালে গন্ধ ছড়ানো টয়লেট থেকে লাশ উদ্ধারের পর তিনি স্বীকার করেন, গৃহবধু রিমুকে তিনিই হত্যা করেছেন।
এই স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। পুলিশ জানায়, রিমুর মৃত্যুর কারণ এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, এমন নির্মম ঘটনা এলাকায় দীর্ঘদিনে দেখা যায়নি। রিমুর পরিবারের দাবি, পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর লাশ গুমের উদ্দেশ্যে বাড়ির কয়েক কিলোমিটার দূরে ফেলে রাখা হয়েছিল।
গ্রেপ্তার লিটনের বিরুদ্ধে আইনগত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং পীরগঞ্জ থানা নিশ্চিত করেছে, তদন্তের স্বার্থে অন্য সম্ভাব্য জড়িতদেরও নজরে রাখা হয়েছে।
নিহতের স্বজনেরা এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন এবং এলাকাবাসী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আহ্বান জানিয়েছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, পরিবারে আগে থেকে বিরোধ ছিল কি না, তা নিয়েও তদন্ত হওয়া উচিত।
পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, রিমু হত্যার ঘটনাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং পুলিশ তা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। তদন্তের পর প্রকৃত তথ্য উদঘাটিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।