ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় ফুল ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে সাত পুলিশসহ ৩০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাত ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামে এ হানাহানি চলেছে। সংঘর্ষের সময় দোকানপাট ও বাড়িঘরে ভাঙচুর করা হয় এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় ফুটবল মাঠ থেকে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১০-১২ দিন আগে মহাজন বাড়ি ও সরকার বাড়ির মধ্যে ফুটবল খেলা নিয়ে বিরোধ হয়েছিল। যদিও স্থানীয়ভাবে তা নিষ্পত্তি করা হয়েছিল। গতকাল বিকেলে বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আবারও দুই পক্ষের ছেলেদের মধ্যে ফুটবল খেলা চলছিল।
খেলা চলাকালে মহাজন বাড়ির এক ছেলে পাশের কবরস্থান থেকে ফুল ছিঁড়ে আনে। একই সময় সরকার বাড়ির আরেক ছেলে স্কুল প্রাঙ্গণ থেকে ফুল ছেঁড়ে। এ নিয়ে দুই পক্ষের তর্কবিতর্ক শুরু হয়। এক পর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। পরে এই ঘটনা দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
রাতের দিকে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে পুলিশের একটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। এ সময় সাত পুলিশ সদস্যসহ মোট ৩০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। আশুগঞ্জ থানার ওসি মো. খাইরুল আলম জানান, সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সামান্য বিষয়কে কেন্দ্র করে এমন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ অগ্রহণযোগ্য। তারা প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আগামী কয়েকদিন এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে বিশেষ টহল দেওয়া হবে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে জন্য সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি আইনের শাসন জোরদার করতে হবে। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন তারা।