প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ২০:২
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে নির্বাচন কমিশনের সদ্য জারি করা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে। এক দশকেরও বেশি সময় পর দলটির নিবন্ধন পুনর্বহাল এবং প্রতীক হিসেবে পুরোনো 'দাঁড়িপাল্লা' ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমদের স্বাক্ষর করা প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। ২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্র সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে দলটির নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে। এরপর ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর ইসি আনুষ্ঠানিকভাবে একটি প্রজ্ঞাপন দিয়ে দলটির নিবন্ধন বাতিল করে। তবে সর্বোচ্চ আদালতের সাম্প্রতিক এক আদেশে ওই রায় বাতিল করা হয় এবং পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দেওয়া হয় নির্বাচন কমিশনকে।
দলটির নিবন্ধন পুনর্বহালের প্রেক্ষিতে ইসি ৪ জুন এক কমিশন সভায় জামায়াতকে পুনরায় স্বীকৃতি দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ঈদের আগেই নেওয়া এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ২৫ জুন আনুষ্ঠানিক প্রজ্ঞাপন জারি করে ইসি। এতে স্পষ্টভাবে বলা হয়, ২০১৮ সালের প্রজ্ঞাপন বাতিল করে ২০১৩ সালে বাতিল হওয়া নিবন্ধন ও প্রতীক আবারও ফেরত দেওয়া হলো।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, জামায়াত এখন থেকে নির্বাচন কমিশনের স্বীকৃত একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে পরবর্তী জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে অংশগ্রহণ করতে পারবে। দলটির বহুদিনের দাবি ছিল, সংবিধানসম্মত সংশোধনের মাধ্যমে তারা রাজনৈতিকভাবে বৈধতা ফিরে পেতে চায়।
অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত দেশের রাজনীতিতে এক নতুন মেরুকরণের সম্ভাবনা তৈরি করবে। কারণ জামায়াতে ইসলামী একসময় বিএনপির মিত্র জোটে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিল।
এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন না হলেও প্রজ্ঞাপনের ভিত্তিতে স্পষ্ট যে, জামায়াতে ইসলামীর জন্য দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞা এবং অনিশ্চয়তার সময় শেষ হয়েছে। দলটি এখন আবার দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে নির্বাচনী মাঠে ফেরার প্রস্তুতি নিতে পারবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পুনর্বহাল রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করবে এবং ইসির নিরপেক্ষতা নিয়ে আবারও আলোচনা শুরু হতে পারে।