টাঙ্গাইলের গোপালপুরে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান হওয়ায় স্ত্রীর ত্যাগের শিকার হয়েছেন এক পোশাক শ্রমিক। স্থানীয় সালিশে এক লাখ টাকা দিয়ে বিষয়টির মীমাংসা করা হয়।
জানা গেছে, গোপালপুর পৌর এলাকার সুতি দিঘুলীপাড়া মহল্লার বাসিন্দা স্বপন চন্দ্র দাস (৩৯), চলতি বছরের ৭ মার্চ টাঙ্গাইলের নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। কালেমা পাঠ শেষে তার নাম রাখা হয় আব্দুর রহমান। ধর্মান্তরের পরপরই তার স্ত্রী ইতি রাণী দাস (২৯) তাকে ছেড়ে একমাত্র সন্তান সৌরভ দাসকে (১৩) নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান।
এই দম্পতির মধ্যে ১৫ বছর আগে হিন্দু ধর্মমতে বিবাহ হয়। স্বামীর ধর্মান্তরিত হওয়ার সিদ্ধান্তকে ইতি রাণী কোনভাবেই মেনে নিতে পারেননি। একাধিকবার পারিবারিক সালিশ হলেও তিনি পুনরায় স্বামীর কাছে ফিরতে রাজি হননি।
অবশেষে স্থানীয় মাতব্বরদের উদ্যোগে শনিবার এক সালিশে সিদ্ধান্ত হয়, স্ত্রীকে এককালীন এক লাখ টাকা প্রদান করা হবে। আব্দুর রহমানের আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় স্থানীয়দের সহায়তায় মোট ১ লাখ ১৬ হাজার টাকা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ১ লাখ স্ত্রীকে, এবং বাকিটা আব্দুর রহমানকে দেওয়া হয়।
সুতি বাজার মসজিদের ইমাম মুফতি শহীদুল্লাহ বলেন, “আব্দুর রহমান আমাকে জানিয়েছে সে আদালতের মাধ্যমে মুসলমান হয়েছে। ধর্মান্তরের পর তার পরিবার তাকে ত্যাগ করেছে। আমরা বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সহানুভূতির সঙ্গে দেখেছি।”
স্থানীয় ব্যবসায়ী মীর সাইফুল ইসলাম জানান, “আব্দুর রহমানের বাবা প্রায় ২৫ বছর আগে ইসলাম গ্রহণ করেন। সম্প্রতি আব্দুর রহমানও মুসলমান হওয়ার পর স্ত্রীকে আহ্বান জানায়, কিন্তু সে রাজি না হয়ে স্বামীকে ত্যাগ করে। এরপর বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার আলোচনা হয়।”
নওমুসলিম আব্দুর রহমান জানান, “আমি দীর্ঘদিন থেকেই ইসলাম ধর্মের প্রতি আগ্রহী ছিলাম। গত বছর মায়ের মৃত্যুর পর সিদ্ধান্ত নিই মুসলমান হবো। গাজীপুরের মনিপুর মাটির মসজিদের এক ইমামের কাছে কালেমা পড়ে, পরে নোটারি করি।”