প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৫, ১৬:০
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে চোরকে চিনে ফেলায় এক বৃদ্ধা নারীকে নির্মমভাবে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। নিহত সিতারা বেগম (৭০) ঈদের ছুটি কাটাতে ছেলের বাড়িতে আসেন, কিন্তু নিজ ঘরেই তাকে জীবনের মূল্য চুকাতে হয়। হত্যাকাণ্ডটি ঘটে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের ওসমান আলী হাজী বাড়িতে, যেখানে তিনি একা ঘুমাচ্ছিলেন। শুক্রবার সকালে তার নিথর দেহ রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরে পড়ে থাকতে দেখে পরিবারের সদস্যরা চিৎকার করে উঠেন।
পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে প্রাথমিক তদন্তে নিশ্চিত হয় এটি একটি পরিকল্পিত চুরির ঘটনা, যেখানে সিতারা বেগম চোরদের চিনে ফেলায় তাকে হত্যা করা হয়। ঘটনার ২০ ঘণ্টার মধ্যেই প্রযুক্তির সহায়তায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধৃতরা হলেন, বেগমগঞ্জের রুহুল আমিনের ছেলে মোরশেদ আলম ওরফে মুন্সি এবং কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের মাহফুজুন নবী সুজন। গ্রেপ্তারকৃতদের জবানবন্দিতে উঠে আসে chilling তথ্য।
মোরশেদের শয়নকক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয় ভিকটিমের মোবাইল, শাড়ি, জামা-কাপড় ও সাউন্ড বক্স। অপরদিকে, সুজনের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় হত্যায় ব্যবহৃত দেশীয় দা, স্ক্রু ড্রাইভার, মোবাইল ফোন ও একটি মোটরসাইকেল। পুলিশ জানায়, তারা রাতের আঁধারে সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে চুরি করতে যায় এবং ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে নির্মমভাবে সিতারা বেগমকে হত্যা করে।
স্থানীয়দের মতে, সিতারা বেগম শান্ত স্বভাবের ও সমাজে সুপরিচিত ছিলেন। পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে এসেই তাকে জীবন দিতে হলো। এ ঘটনায় এলাকায় চরম শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গ্রেফতারকৃত সুজন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে পুলিশ জানায়।
সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোরশেদ আলম জানান, দুই আসামিকে নোয়াখালীর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং ঘটনাটিকে গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দ্রুত চার্জশিট দেওয়া হবে। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন এলাকাবাসী।