নোয়াখালীতে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে মো. আলাউদ্দিন নামের এক নির্মাণ শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। নিহত আলাউদ্দিন কবিরহাট উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়নের গাজীরবাগ গ্রামের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার দুপুরে বসুরহাট পৌরসভার হাসপাতাল রোড এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। সকাল থেকেই তিনি ওই ভবনের পঞ্চম তলায় গাঁথুনির কাজে নিয়োজিত ছিলেন। সহকর্মীদের সঙ্গে কাজ করছিলেন এমন সময় হঠাৎ অসাবধানতাবশত নিচে পড়ে যান। স্থানীয়রা জানান, মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলেই অচেতন হয়ে পড়েন এবং পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের উপপরিদর্শক আবু কাউছার জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে এবং প্রাথমিক তদন্তের পর ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে আমরা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি এবং প্রয়োজনে ভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও অনুসন্ধান করা হবে।

এদিকে আলাউদ্দিনের মৃত্যুতে তার পরিবার ও এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা জানান, তিনি একজন পরিশ্রমী এবং দায়িত্বশীল ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর এমন আকস্মিক মৃত্যুতে পরিবারে নেমে এসেছে চরম দুর্দশা। দুর্ঘটনার পর নাহার টাওয়ার নির্মাণস্থলে কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং নির্মাণ শ্রমিকদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্মাণকাজে নিরাপত্তার বিষয়টি এখনো অনেক ক্ষেত্রে উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে। নির্মাণ শ্রমিকদের নিরাপদ কাজের পরিবেশ নিশ্চিত না করলে এমন দুর্ঘটনা ভবিষ্যতেও ঘটতে পারে। শ্রমিকদের জন্য হেলমেট, বেল্ট এবং নিরাপত্তামূলক অন্যান্য ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করতেই হবে।

এই ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্মাণকারীদের প্রতি দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। নির্মাণশ্রমিক আলাউদ্দিনের মৃত্যুর ঘটনায় একটি অপূরণীয় ক্ষতির পাশাপাশি দেশের শ্রম নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতাও আবারও সামনে এসেছে।

এমতাবস্থায়, সকল নির্মাণসাইটে নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন ও নজরদারির দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। মৃত আলাউদ্দিনের পরিবার যেন যথাযথ ক্ষতিপূরণ পায়, সে বিষয়েও দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।