প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫, ১১:৪৮
ঝালকাঠি জেলা আইনজীবী সমিতি আওয়ামীপন্থী ১৬ জন আইনজীবীর সদস্যপদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহাদাৎ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মো. নাসিমুল হাসান স্বাক্ষরিত চিঠিতে সোমবার এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। সদস্যপদ বাতিলকৃতদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খান সাইফুল্লাহ পনির, সাবেক সভাপতি আবদুল মান্নান রসুল, সাবেক সহ-সভাপতি মো. মঞ্জুর হোসেন এবং তার ছেলে মোর্শেদ কামালসহ অন্যান্য নাম রয়েছে। তবে বিতর্কিত আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু ও ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমরের নাম নতুন তালিকায় ছিল না। তাদের আজীবন সদস্যপদ গত বছর বাতিল করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
অ্যাডভোকেট শাহাদাৎ হোসেন জানান, গত বছরের ৫ আগস্টের পরে জেলা আইনজীবী সমিতির পুরনো কমিটি আত্মগোপনে চলে যাওয়ার পর একটি অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির সভায় আমু ও ওমরের আজীবন সদস্যপদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নতুন সদস্যপদ বাতিল তালিকায় শুধু আওয়ামী লীগ নয়, বিভিন্ন অপরাধে জড়িত সদস্যরাও রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ভবিষ্যতেও অপরাধের প্রমাণ পেলে আরও সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে চিঠিতে সদস্যপদ বাতিলের কারণ হিসেবে কোনো নির্দিষ্ট ধারা উল্লেখ করা হয়নি।
বাতিল হওয়া সদস্যরা অভিযোগ করছেন, এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অন্যায়। এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির ভর্তি বিষয়ক সম্পাদক আক্কাস সিকদার বলেন, শুধু আওয়ামী লীগ নয়, অন্যান্য দলের সমর্থকদের সদস্যপদ বাতিল নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে, তবে সাধারণ সভা ছাড়া কার্যনির্বাহী কমিটি এমন বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
এদিকে, বাতিল হওয়া সদস্য কার্তিক চন্দ্র দত্ত অভিযোগ করেন, তাদের সদস্যপদ অন্যায়ভাবে বাতিল করা হয়েছে এবং তারা আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। সাধারণ সম্পাদক মো. নাসিমুল হাসান জানান, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুসারে যারা অনিয়ম ও সহিংসতা সংঘটিত করেছেন, তাদের সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের পর ঝালকাঠি আইনজীবী সমিতির অভ্যন্তরীণ বিরোধ প্রকাশ্যে এসেছে। স্থানীয় রাজনৈতিক মহল ও সাধারণ মানুষের মধ্যেও বিষয়টি নিয়ে নানা মতামত ও আলোচনা চলছে। অনেকেই আশা করছেন, ভবিষ্যতে সমিতির কার্যক্রম আরও স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হবে। ঝালকাঠি আইনজীবী সমিতির ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ডে এই সিদ্ধান্ত বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।