ঠাকুরগাঁও টিটিসিতে লাইসেন্স বাণিজ্য নিয়ে ফেসবুকে তোলপাড়

গেল ২৯ মে এই অনিয়ম নিয়ে প্রথম প্রকাশ্যে আসে অভিযোগ। দুদকের ঠাকুরগাঁও সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আজমির শরিফ মারজী জানান, ড্রাইভিং কোর্সে অংশ নেওয়া ৭০ জন প্রশিক্ষণার্থীর কাছ থেকে এই ঘুষ আদায় করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। এই অনিয়মের পেছনে রয়েছেন টিটিসির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শামছুর রহমান, খণ্ডকালীন প্রশিক্ষক ফারুক হোসেন ও অটোমোটিভ ট্রেডের প্রধান প্রশিক্ষক সাদেকুল ইসলাম।

অভিযোগ রয়েছে, যারা টাকা দিয়েছে, শুধু তাদেরই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ দেখানো হয়েছে। যারা দেয়নি, তাদের ফেল করানো হয়। এমনকি প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত তেল, ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাও পুরোপুরি দেওয়া হয় না। অনেক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, ভয়ভীতির কারণে এতদিন মুখ খোলেননি।

প্রশিক্ষক দেলোয়ার হোসেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনিয়মের বিরুদ্ধে পোস্ট দেওয়ার পর টিটিসি কর্তৃপক্ষ তাকে শোকজ করে। এই পদক্ষেপে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে। দেলোয়ার হোসেন বলেন, "আমি সত্য বলেছি, সেজন্য শোকজ করা হয়েছে। দুদক তদন্ত করলেই সব প্রমাণিত হবে।"

অন্যদিকে, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শামছুর রহমান ফেসবুক পোস্টে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ‘হলুদ সাংবাদিকতা’র অভিযোগ আনেন। তার এই মন্তব্যে সাংবাদিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

তবে পুরো ঘটনার বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও শামছুর রহমান গণমাধ্যমে কোনো মন্তব্য দিতে রাজি হননি। বরং সংবাদ প্রকাশের পর তিনি প্রশিক্ষণার্থীদের দিয়ে একটি লিখিত বিবৃতি নেওয়ার চেষ্টা করেছেন, যাতে বলা হয় – লাইসেন্স বাবদ কোনো টাকা নেয়া হয়নি।

স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা দাবি করছেন, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও অনিয়মে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। প্রশিক্ষণার্থীদের অধিকার রক্ষা ও সরকারি প্রকল্পে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা জরুরি বলেও তারা মত দেন।