প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৫, ১৮:৫৮
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নে ঈদুল আযহা উপলক্ষে ভিজিএফের চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, প্রকৃত হতদরিদ্রদের বাদ দিয়ে দুই হাজারের মতো সচ্ছল ব্যক্তি ও চাকরিজীবীর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ভিজিএফের তালিকায়, যার ফলে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা চাল থেকে বঞ্চিত হয়েছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, ভিজিএফের তালিকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ব্যবসায়ী এবং রাজনৈতিক নেতাদের নাম পর্যন্ত যুক্ত হয়েছে, যা হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি সহায়তা ব্যবস্থার প্রতি প্রশ্ন তোলে।
ঈদের আগের দিন ভিজিএফের চাল বিতরণের সময় স্থানীয় লোকজন এই অনিয়মের প্রতিবাদ জানালে বিতরণ কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে। পরবর্তীতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নাম যাচাই করে চাল দেওয়া হয়। তবুও তালিকায় নাম না থাকায় অনেক হতদরিদ্র নারী-পুরুষ সারাদিন লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও খালি হাতে ফিরে যায়। এসব মানুষের মধ্যে অনেকে অভিযোগ করেছেন, তাদের বরাদ্দকৃত স্লিপ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিক্রি হয়েছে। যদিও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক দাবি করেন, কিছু ভুল নাম তালিকায় যুক্ত হলেও স্লিপ বিক্রির অভিযোগ সত্য নয়।
তালিকার ২৫৭ ও ২৫৮ নম্বরে থাকা দুই শিক্ষক আশরাফুজ্জামান ও আরমান আলী এবং ২৯৩৯ নম্বরে থাকা সেচ্ছাসেবক দলের নেতা লুৎফর রহমান জানিয়েছেন, কীভাবে তাদের নাম তালিকায় এসেছে তারা জানেন না এবং এই অনাকাঙ্ক্ষিত অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে তারা সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হয়েছেন। ইউএনও গোলাম ফেরদৌস জানিয়েছেন, তালিকায় অনিয়ম ধরা পড়ায় চাল বিতরণ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে এবং তালিকা সংশোধনের পর পুনরায় সঠিকভাবে চাল বিতরণ করা হবে।
চাল বিতরণের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম জানান, ১ হাজার ৮৪০ জন তালিকাভুক্ত ব্যক্তি চাল নিতে না আসায় তাদের বরাদ্দকৃত প্রায় সাড়ে ১৮ মেট্রিক টন চাল ইউনিয়ন পরিষদের গুদামে সিলগালা করে রাখা হয়েছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, তালিকা সংশোধনের কাজেও আবার অনিয়ম হতে পারে, তাই তারা নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।