প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৫, ১৭:৯
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার অচিন্তপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ নারী, পুরুষ ও শিশুসহ ১৫ জন বাংলাদেশিকে ঠেলে পাঠিয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন অচিন্তপুর সীমান্ত ফাঁড়ির ইনচার্জ কমান্ডার রফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে সীমান্তের ২৮৫ নম্বর মেইন পিলার এলাকায় বিএসএফ নিয়ন্ত্রণাধীন অংশে হঠাৎ বিদ্যুতের আলো নিভিয়ে ফেলা হয়। বিজিবি সদস্যরা তাৎক্ষণিক বিষয়টি বুঝতে পেরে সতর্ক অবস্থানে যান এবং ওঁত পেতে অপেক্ষা করতে থাকেন।
এরপর অন্ধকারের মধ্যে ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে ১৫ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে তিনজন পুরুষ, তিনজন নারী এবং নয়জন শিশু রয়েছে। বিজিবি সদস্যরা সবাইকে আটক করে নিজ হেফাজতে নিয়ে আসেন। এসব মানুষ সীমান্ত পার হয়ে কীভাবে ভারতীয় ভূখণ্ডে গিয়েছিল এবং কী প্রক্রিয়ায় তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে সে বিষয়ে এখনো বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, এই এলাকা দিয়ে আগে বহুবার এমন ঘটনা ঘটেছে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা মাঝেমধ্যে বিভিন্ন অজুহাতে বাংলাদেশিদের আটক করে, পরে আবার অনানুষ্ঠানিকভাবে ঠেলে পাঠিয়ে দেয়। এতে করে সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। বিশেষ করে শিশুদের এমন পরিস্থিতিতে ঠেলে পাঠানো মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল বলে মনে করছেন অনেকে।
স্থানীয় প্রশাসন ও মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, এটি একটি স্পর্শকাতর ইস্যু। আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে এভাবে মানুষ ঠেলে পাঠানো গ্রহণযোগ্য নয়। তারা আরো বলেন, এমন ঘটনায় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে আলোচনা হওয়া দরকার এবং ভবিষ্যতে যেন এমন না হয় সে ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে আটককৃত নারী, পুরুষ ও শিশুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সীমান্ত এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে এবং পুরো বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। স্থানীয়দের মধ্যে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে কার্যকর পদক্ষেপ চায় সকলে।
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে এই ধরনের অনিয়মিত কর্মকাণ্ড দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরকারিভাবে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে এসব সমস্যার স্থায়ী সমাধান খোঁজা জরুরি। নিরাপদ ও মানবিক সীমান্ত ব্যবস্থা ছাড়া এই অঞ্চলের মানুষ এমন ঘটনার শিকার হতে থাকবে।