প্রকাশ: ৮ জুন ২০২৫, ১৮:১৭
ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আমলে দেশের মানুষকে জীবন্ত কবর দেওয়া হয়েছে, সাজানো মামলায় ফাঁসিতে ঝুলানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। দীর্ঘ সময় কারাবন্দি থাকার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি জানান, তিনবার তাকে জেলে নেওয়া হয় এবং রিমান্ডে নিয়ে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা জানতে চাওয়া হয়েছিল। তিনি স্পষ্ট করে জানান, জামায়াতের স্বপ্ন একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়া।
রবিবার (৮ জুন) দুপুরে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভা মিলনায়তনে পেশাজীবী প্রতিনিধি ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি অভিযোগ করেন, গত সাড়ে ১৬ বছর তাকে জনগণের সামনে আসতে দেওয়া হয়নি। সেই সময়ে বহু মানুষ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, অনেকে খুন কিংবা গুম হয়েছেন।
তিনি বলেন, আজও সিলেটের নেতা ইলিয়াস আলীর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তিনি জীবিত না মৃত, তা তার পরিবারও জানে না। রাষ্ট্রের ভয়ভীতির সংস্কৃতির কারণে মানুষ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কোনো রাজতন্ত্র নয়, অথচ গত ১৫ বছরের শাসন রাজতন্ত্রকেও হার মানিয়েছে। অথচ তখন বলা হতো দেশ নাকি উন্নয়নের রোল মডেল।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াত ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবে। তিনি মনে করেন, নির্বাচন একটি দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার এবং এখানে বাইরের দেশের হস্তক্ষেপ কাম্য নয়। তিনি বলেন, আমি সাধারণ একজন মানুষ, তবে ন্যায়বিচারের পক্ষে আছি। যদি সৎ নেতৃত্ব আসে, তাহলে পাঁচ বছরের মধ্যেই দেশের চেহারা পাল্টে যাবে।
তিনি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে বলেন, যেন দেশ এমন একজন নেতার হাতে যায়, যিনি ন্যায়বিচারের উপর দৃঢ় থাকবেন এবং জনগণের কল্যাণে কাজ করবেন। তিনি বিশ্বাস করেন, দেশের পরিবর্তনের জন্য একটি সৎ ও জনভিত্তিক নেতৃত্বই যথেষ্ট।
সভায় সভাপতিত্ব করেন কুলাউড়া উপজেলা জামায়াতের আমির সহকারী অধ্যাপক আব্দুল মুন্তাজিম এবং সঞ্চালনা করেন সেক্রেটারি বেলাল আহমদ চৌধুরী। এতে আরও বক্তব্য রাখেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিলেট মহানগর আমির মো. ফখরুল ইসলাম এবং ঢাকার পল্টন থানা জামায়াত আমির শাহীন আহমেদ খান।
এছাড়া বক্তব্য দেন মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান, অধ্যক্ষ ইয়ামির আলী, ইসলামী আন্দোলনের নেতা আব্দুল কুদ্দুসসহ স্থানীয় শিক্ষা, ব্যবসা ও সমাজসেবার সঙ্গে যুক্ত বিশিষ্টজনরা। মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।