প্রকাশ: ১ জুন ২০২৫, ১৩:৬
সিলেটের গোলাপগঞ্জে ঘুমন্ত অবস্থায় টিলাধসে চাপা পড়ে একই পরিবারের চারজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন মা, বাবা এবং তাদের দুই শিশু সন্তান। হৃদয়বিদারক এই দুর্ঘটনায় গোটা এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
শনিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টা ১৫ মিনিটে উপজেলার লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নের বখতিয়ারঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসীর ভাষ্য অনুযায়ী, গভীর রাতে হঠাৎ টিলার মাটি ধসে পড়ে তাদের বসতঘরের ওপর। তখন পরিবারটি ঘুমিয়ে ছিল, ফলে তারা চাপা পড়ে যায়।
ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা চিৎকার শুনে ছুটে এসে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন। পরে গোলাপগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। দীর্ঘ সময় পর মাটি সরিয়ে একে একে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান খলকুর রহমান বলেন, রাতে খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। চারজনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে, তবে ধারণা করা হচ্ছে ঘরের নিচে আরও কেউ থাকতে পারেন।
এ ঘটনায় এলাকা জুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয়রা জানান, বর্ষার শুরুতেই পাহাড়ি টিলাগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে, কিন্তু সময়মতো সতর্ক ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। ফলে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটছে।
গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, এখনো উদ্ধার অভিযান চলছে। যতক্ষণ পর্যন্ত পুরো ঘর পরিষ্কার না হয়, ততক্ষণ প্রকৃত পরিস্থিতি নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। উদ্ধার কার্যক্রম শেষ হলে বিস্তারিত জানানো হবে।
উল্লেখ্য, সিলেট অঞ্চলে বর্ষা এলেই পাহাড়ি ঢল ও টিলাধসের ঘটনা বাড়ে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বারবার সতর্কতা দিলেও ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় বসবাস বন্ধ হয় না। এ কারণে প্রতি বছরই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এই দুর্ঘটনা আবারও প্রমাণ করল, টিলার পাদদেশে বসবাস করা কতটা বিপজ্জনক। স্থানীয় প্রশাসনের উচিত দ্রুত ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া এবং টিলা সংলগ্ন বসতির উপর নজরদারি বাড়ানো।