বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) অস্থায়ী কর্মচারীরা বেতন নিয়ে গোলযোগের জেরে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। বুধবার (২৮ মে) সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত অবধি বরিশাল নগরীতে পরিচ্ছন্নতাসহ বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দেয়। এতে করে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় দ্রুতই ময়লার স্তুপ জমে ওঠে এবং দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঈদের আগেই ২৮ মে অস্থায়ী বা দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োজিত কয়েকশ’ শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হয়। কিন্তু শ্রমিকদের অভিযোগ, ৩০ দিনের স্থলে তাদেরকে মাত্র ২২ দিনের বেতন দেওয়া হয়েছে এবং বাকি আট দিনের বেতন কেটে নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনা জানাজানি হতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন পরিচ্ছন্নতা বিভাগসহ অন্যান্য অস্থায়ী শ্রমিকরা।
বেতন কেটে নেওয়ার প্রতিবাদে শ্রমিকরা নগরীতে বিক্ষোভ করেন এবং কর্মবিরতি শুরু করেন। এতে নাজির মহল্লা, সদর রোড, কাউনিয়া প্রধান সড়ক, পানির ট্যাংকির সামনে, জানকি শিং রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় ময়লার স্তুপ জমে যায়। কুকুর-বিড়াল ময়লা টেনে ছড়িয়ে দিচ্ছে, এতে করে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
শ্রমিকরা বলছেন, তারা প্রতিদিন কাজ করেন, এমনকি শুক্রবার এবং সরকারি ছুটির দিনেও রাস্তাঘাট পরিষ্কার রাখেন। তাদের প্রশ্ন, অন্যান্য কর্মীরা যদি ছুটি পেলেও বেতন পান, তবে অস্থায়ী কর্মীদের কেন বেতন কাটা হলো? তাদের দাবি, কাজ অনুযায়ী ন্যায্য মজুরি দেওয়াটা তাদের অধিকার।
এ বিষয়ে বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল বারি বলেন, “সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী দৈনিক ভিত্তিতে কর্মরতদের মাসে ২২ দিনের বেশি সময় কাজ করানো যাবে না। সেই অনুযায়ীই বেতন দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “এটি আমাদের এখতিয়ারের বাইরে, কাজ না করলে সেটি তাদের সিদ্ধান্ত।”
শেষ খবর অনুযায়ী, ২৮ মে দিবাগত রাত দেড়টার সময় বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. রায়হান কাওসারের নেতৃত্বে সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে বৈঠক চলছিল। সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে প্রশাসন ও শ্রমিক নেতাদের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।
বর্তমানে নগরবাসী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সেবা বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে। প্রশাসনকে দ্রুত কার্যকর সমাধান দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।