নওগাঁর মান্দা উপজেলায় শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে দলবদ্ধ হামলার শিকার হন এশিয়ান টেলিভিশনের নওগাঁর প্রতিনিধির কাজ করা সাংবাদিক রায়হান আলী। পরানপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামে তার বাবার বাড়ির গেটের সামনে বিএনপি নেতা দেলোয়ার হোসেন ও তাঁর অনুসারীরা লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে এসে হামলায় পাল্লা দেন। এই ঘটনা জড়িয়ে আহত হয়েছেন রায়হান আলী, তাঁর বাবা, বড় ভাই ও বড় আব্বা।
হামলার সময় রায়হান আলী বাড়ি ফিরে আসছিলেন। গ্রামের প্রধান সোলাইমান আলী সরদার, হুমায়ন আলী, সাংবাদিক রায়হান আলী ও খোদাবক্স আলী গুরুতর আহত অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। এ খবর পেয়ে মান্দা থানা পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
অভিযুক্ত বিএনপি নেতা দেলোয়ার হোসেনের বাড়ি ও আশপাশে চালানো ভাঙচুরে রায়হান আলীর ব্যবহৃত মোটরসাইকেলুন্ড ভেঙে ফেলা হয়। হামলাকারীরা বাড়ির জানালা-কাঠামো ভাঙচুর করেও যান। আহতদের মধ্যে বড় আব্বা খোদাবক্স আলীর অবস্থা সবচেয়ে গুরুতর হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
আহতদের চিকিৎসা চলাকালে রায়হান আলীর বাবা মাথার চারটি, বড় ভাইয়ের মাথায় নয়টি সেলাই দেওয়া হয়। বড় আব্বার কোমরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মেরুদণ্ডের হাড় ফেটে গেছে এবং দুই হাত ভেঙে গিয়েছে। রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি বড় আব্বা মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে।
রায়হান আলী অভিযোগ করেন, জমি সংক্রান্ত একটি মামলা তুলে নিতে গত কয়েক মাস ধরে দেলোয়ার হোসেন তার পরিবারকে হয়রানি করছিলেন। মামলাটি নিয়ে সংবাদ প্রচার করার পর থেকে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিলেন। পূর্ব পরিকল্পিত হামলায় পরিবার ও সম্পদ নস্ট করার উদ্দেশ্য ছিল বলে দাবি করেন তিনি।
মান্দা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনসুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে এবং হামলাকারীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রিফাত হোসাইন সবুজ বলেন, সাংবাদিকদের ওপর এ ধরনের হামলা গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি প্রশাসনের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, শুধু সাংবাদিকই নয়, তার পরিবারের সদস্যদের সাথেও নিষ্ঠুর আচরণ হয়েছে।
স্থানীয় কয়েকজন বলেন, গ্রামে দীর্ঘদিনের জমি বিরোধ নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি দ্বন্দ্ব চলে আসছে। তাতে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের ব্যক্তিগত স্বার্থও জড়িত রয়েছে। পুলিশের সুষ্ঠু তদন্ত ও হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায় তারা।