দেবীদ্বারে একমাসেও সন্ধান মেলেনি নিখোঁজ প্রতিবন্ধী সোহাগের
শফিউল আলম রাজিব
প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ২০:১৪
শেয়ার করুনঃ

দেবীদ্বারের নিখোঁজ শারিরীক ও বাক প্রতিবন্দী মোহাম্মদ রাকিব হোসেন সোহাগ (ছবি সংগৃহীত)
কুমিল্লার দেবীদ্বারে খালার বাড়িতে ইফতার দিয়ে ফেরার পথে নিখোঁজ হওয়া শারীরিক ও বাকপ্রতিবন্ধী তরুণ মোহাম্মদ রাকিব হোসেন সোহাগ (২১)-এর এক মাস সাত দিন পার হলেও এখনও সন্ধান মেলেনি। নিখোঁজের পর থেকে তার পরিবারে নেমে এসেছে চরম দুর্দশা। হার্টের রোগে আক্রান্ত পিতা মোহাম্মদ মোরশেদ আলম (৪৬) হয়ে পড়েছেন কর্মহীন, অন্যদিকে মানসিক যন্ত্রণায় অসুস্থ মা শেলিনা বেগম (৩৮) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনাটি ঘটে ১৪ রমজান (১৪ মার্চ) বিকেলে, দেবীদ্বার উপজেলার ৯নং গুনাইঘর ইউনিয়নের গুনাইঘর গ্রামে। ইফতার সামগ্রী নিয়ে প্রতিবেশী গ্রামে খালার বাড়িতে যান প্রতিবন্ধী সোহাগ। সেখান থেকে ফেরার পথে তিনি নিখোঁজ হন। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। ওই দিন রাতেই সোহাগের বাবা দেবীদ্বার থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন।
সোহাগ তার পরিবারের একমাত্র পুত্র সন্তান, তার আরও তিনজন ছোট বোন রয়েছে। পিতা অটোচালক হিসেবে দিনমজুরি করতেন। নিখোঁজ সন্তানের খোঁজে তিনি দিনের পর দিন থানায়, গ্রামে, আত্মীয়দের বাড়ি এবং হাসপাতাল ঘুরে বেড়িয়েছেন। কিন্তু কোনো সূত্র পাননি। অসুস্থ শরীর নিয়েও সন্তানের খোঁজে দিনরাত ছুটে বেড়াচ্ছেন তিনি। বর্তমানে তিনি কাজেও যেতে পারছেন না।
সোহাগের মা শেলিনা বেগম জানান, একমাত্র ছেলের কথা ভেবে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন, শেষমেশ তাকে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, “আমার সোহাগের হাড়গোড়ও যদি কেউ খুঁজে পায়, আমি তাকে বুকে জড়িয়ে মরতে চাই।”

এ বিষয়ে দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামসুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, নিখোঁজ ডায়েরি হওয়ার পর থেকেই পুলিশ সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সোহাগের সন্ধানে অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।
একজন দরিদ্র পরিবারের প্রতিবন্ধী ছেলের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে চরম উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। পরিবারটি আশাবাদী—জনগণের সহানুভূতি ও প্রশাসনের সহায়তায় তারা তাদের প্রিয় সন্তানকে ফিরে পাবে।

সর্বশেষ সংবাদ
