দেবীদ্বারে পাগলী ও তার নবজাতক সন্তানের ঠিকানা হলো সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে

দেবীদ্বার উপজেলার ৬ নং ফতেহাবাদ ইউনিয়নের ঘোষঘর গ্রামের জব্বর আলী মুন্সীর বাড়ির ভিক্ষুক আয়শা বেগমের (৫০) ঘরে প্রায় চার মাস ধরে আশ্রয় নিয়ে ছিলেন আকলিমা। গত ১২ মার্চ দিবাগত রাতে তিনি এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। শিশুটির বয়স বর্তমানে এক মাস।

আকলিমা ও মাহিয়াকে ঢাকায় স্থানান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রায়হানুল ইসলাম, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা বরুণ চন্দ্র দে, দেবীদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তাছলিমা সিকদার, সাংবাদিক, সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মী ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা বরুণ চন্দ্র দে জানান, আকলিমার সন্ধান পাওয়ার পর থেকেই তাকে নিয়মিত চিকিৎসা এবং আর্থিক সহায়তা দিয়ে নজরদারির আওতায় রাখা হয়েছিল। সন্তান জন্মের পর অনেকেই শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তবে মা ও সন্তানের নিরাপত্তা এবং ভবিষ্যৎ সুরক্ষার স্বার্থে তাদের সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নিকট দত্তক নেওয়ার আবেদন করা যাবে এবং চাইলে শিশুটিকে ‘ছোটমনি নিবাসেও’ স্থানান্তর করা হতে পারে।

ভিক্ষুক আয়শা বেগম, যিনি আকলিমা ও তার সন্তানকে এতদিন নিজের ঘরে আশ্রয় দিয়েছিলেন, বলেন, “আমার আর্থিক অবস্থা ভালো হলে কখনোই তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠাতে দিতাম না। আমি নিজ সন্তানের মতোই ওদের যত্ন করেছি। আজ বিদায় দিতে খুব কষ্ট হচ্ছে।”

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল হাসনাত খাঁন বলেন, মহিলাটি নিরাশ্রয় ও অভিভাবকহীন হওয়ায় ‘ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তি (পুনর্বাসন) আইন, ২০১১’ অনুসারে তাকে সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে সমাজসেবা বিভাগের কর্মকর্তাসহ যারা মানবিক কাজে অংশ নিয়েছেন, তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান তিনি।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মা ও সন্তানের নিরাপত্তা ও পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।