কুড়িগ্রামের উলিপুর পৌরসভার গুনাইগাছ মোড়ে কয়েকজন তরুণের প্রচেষ্টায় পরিবর্তন এলো রোস্তম পাগলার জীবনে। স্থানীয়দের কাছে তিনি রোস্তম পাগলা নামেই পরিচিত ছিলেন, কিন্তু কিছু তরুণের উদ্যোগে তিনি ফিরে পেলেন পরিচ্ছন্ন ও সম্মানজনক এক চেহারা।
একদিন ওই এলাকায় কয়েকজন তরুণ এসে জানতে চান, এখানে কোনো পাগল আছেন কি না। স্থানীয়রা জানান, রোস্তম পাগলা রয়েছেন। তরুণরা বলেন, তারা তাকে পরিবর্তন করে দিতে চান। প্রথমে রোস্তম রাজি না হলেও স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক মকবুল, জালাল উদ্দীনসহ অনেকে তাকে বোঝাতে থাকেন। একপর্যায়ে তাকে চা খাওয়ানো হয়, যাতে তিনি কিছুটা আশ্বস্ত হন।
এরপর তরুণরা রোস্তমকে রাস্তার পাশে বসিয়ে তার চুল-দাঁড়ি পরিস্কার করতে শুরু করেন। এক তরুণ ট্রিমার দিয়ে চুল কাটেন, অন্য একজন পানি ঢেলে গোসল করান, আরেকজন শ্যাম্পু করেন। পরে তার ময়লা পোশাক পরিবর্তন করে টি-শার্ট ও ট্রাউজার পরিয়ে দেন।
পোশাক পরিবর্তনের পর তরুণরা তাকে পাশের একটি হোটেলে নিয়ে যান এবং খাবার খাওয়ান। পরিচ্ছন্ন চেহারার রোস্তমকে তখন আর পাগল মনে হচ্ছিল না। উপস্থিত এলাকাবাসী এই উদ্যোগ দেখে অভিভূত হন এবং তরুণদের প্রশংসা করেন।
এই মহতী উদ্যোগের পেছনে ছিলেন কুড়িগ্রামের তবকপুর ইউনিয়নের কাজলডাঙ্গা গ্রামের আবু সাঈদ ফাউন্ডেশনের সদস্যরা। তারা হলেন হাসানুজ্জামান রাসেল, রাকিবুল হাসান সোহাগ, আসাদুজ্জামান আশিক, রায়হান কবির, আল ইমরান, মোঃ রাজ ও মোঃ দুলাল মিয়া।
তরুণরা জানান, তারা সমাজের অসহায় ও দুস্থ মানুষের জন্য কাজ করতে ভালোবাসেন। তাদের এ কাজে গর্ববোধ হয়। স্থানীয়রাও তাদের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
আবু সাঈদ ফাউন্ডেশন ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে জনকল্যাণমূলক কাজ করে আসছে। সংগঠনের সদস্যরা সমাজ পরিবর্তনে আরও মানুষের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
এ ধরনের উদ্যোগ যদি সমাজে আরও ছড়িয়ে পড়ে, তবে অসহায় মানুষদের জীবন বদলে যেতে পারে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।