প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৩, ২:২১
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে আলোচিত প্রার্থী আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগের পর একরকম আড়ালেই ছিলেন। ফোনেও কথা বলেননি কারও সঙ্গে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সরাইল উপজেলার পরমানন্দপুর হাজী মকসুদ আলী ভূঞা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে মতবিনিময় সভার মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন তিনি।
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক এমপি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানাকে নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা ও বর্ষীয়ান রাজনীতিক আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া।
দল ছাড়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। তিনি জানান, ‘আমার হাত ধরেই সরাইল-আশুগঞ্জে বিএনপির জন্ম। এখন যদি মানসম্মান না থাকে দল করব কীভাবে? মানুষ মানসম্মানের জন্যই দল করে। দল থেকে কয়েক বছর ধরে সম্মান পাইনি। দলের কেউ কোনো কিছুর বিষয়ে জিজ্ঞাসা করার প্রয়োজন মনে করেনি। দল ও দলের নেতাকর্মীদের কাছ থেকে যথাযথ মূল্যায়ন পাইনি। তাই দল থেকে পদত্যাগ করেছি।
ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা কর্তৃক তাকে নিয়ে করা বিভিন্ন মন্তব্যের রেশ টেনে তিনি আরও বলেন, ‘আমার বাবা-দাদা চৌদ্দ গোষ্ঠীও তাকে চিনত না। তবে তার বাবাকে আমরা চিনতাম। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অনুরোধে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য পদে রুমিন ফারহানার নাম প্রস্তাব করেছিলাম। আমার প্রস্তাবে রুমিন ফারহানা এমপি (সংসদ সদস্য) হয়েছেন। এখন আমার বিরুদ্ধে কথা বলেন।’
গত ১৫ জানুয়ারি আশুগঞ্জের একটি রেস্তোরাঁয় দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক করে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘অনেকের সঙ্গে তার (আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া) ব্যক্তিগত কিংবা পারিবারিক সম্পর্ক থাকতে পারে। কিন্তু ভোটের দিন আমরা কেউ ভোটকেন্দ্রে যাব না। কেউ যেন তার জন্য একটা ভোটও না চাই। দল অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে আছে। যে সাত্তারের জন্য কাজ করবে, তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।’
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা ও বর্ষীয়ান রাজনীতিক আবদুস সাত্তার ভূঁইয়াসহ চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচন কমিশন মোট আটজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করলেও চার প্রার্থী ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এরা হলেন-ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন ও আওয়ামীপন্থী শিক্ষক সংগঠন স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলম এবং জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত নেতা জিয়াউল হক মৃধা। তারা চারজনই ‘হেভিওয়েট প্রার্থী’ ছিলেন। তাদে সরে দাঁড়ানোয় সাত্তারের জয়ে আর কোনো বাধা দেখছেন না ভোটাররা।
উল্লেখ্য, বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) সংসদীয় আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচিত হন আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। তিনি পাঁচবারের সাবেক সংসদ সদস্য। তবে দলীয় সিদ্ধান্তে সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন সাত্তার। এরপর দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে নিজের ছেড়ে দেয়া আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়তে মনোনয়ন ফরম কিনেন তিনি। এর প্রেক্ষিতে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পদ থেকে সাত্তারকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি।